ভারতে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আরোপিত লকডাউন আরও দুই সপ্তাহ বাড়িয়েছে। সেই অনুসারে পূর্বঘোষিত ছয় সপ্তাহের লকডাউনের সঙ্গে আরও দুই সপ্তাহ যুক্ত হয়ে মে মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন থাকবে পুরো ভারত। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশের বরাতে শুক্রবার এ খবর জানিয়েছে এনডিটিভি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই আদেশে বলা হয়েছে, লকডাউনের মধ্যে শুধুমাত্র জরুরি সেবা চালু থাকবে। এছাড়াও সকল ধরনের হোটেল, রেস্তোরা, অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানএবং বিমানের ফ্লাইট বন্ধ থাকবে। এদিকে, কিছুকিছু জেলায় নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুরো ভারতকে রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোনে ভাগ করা হয়েছে। গ্রিন জোনে সীমিত আকারে ই-কমার্স, যান চলাচল এবং অন্যান্য কর্মকা- করা যাবে। অরেঞ্জ জোনে বিশেষ ব্যবস্থায় প্রতি গাড়িতে দুই জন করে চলাচল করতে পারবেন। কিন্তু, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত রেড জোনে সকল ধরনের কর্মকান্ড, যান চলাচল এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। ওই অঞ্চলের অধিবাসীদের কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ভারতে শনিবার কোভিড-১৯ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে মোট এক হাজার ২১৮ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৩৩৬ জনে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ কথা জানায়। খবর পিটিআই’র। মন্ত্রণালয় জানায়, কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৯ হাজার ৯৫০ জন সুস্থ হয়ে উঠায় তাদেরকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৬ হাজার ১৬৭ জন। সূত্র জানায়, আক্রান্তদের ১১১ জন বিদেশী নাগরিক। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নতুন করে মোট ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে মহারাষ্ট্রে ২৬ জন, গুজরাটে ২২ জন, মধ্য প্রদেশে ৮ জন, রাজস্থানে ৪ জন, দিল্লীতে ২ জন এবং উত্তর প্রদেশ, বিহার, হরিয়ানা ও তামিল নাড়ূতে ১ জন মারা গেছে। মোট মৃত ১ হাজার ২১৮ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশী প্রাণ হারিয়েছে মহারাষ্ট্রে। সেখানে ৪৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরে গুজরাটে ২৩৬ জন, মধ্য প্রদেশে ১৪৫ জন, রাজস্থানে ৬২ জন, দিল্লীতে ৬১ জন, উত্তর প্রদেশে ৪২ জন এবং পশ্চিম বঙ্গ ও অন্ধ্রপ্রদেশে ৩৩ জন করে মারা গেছে। তামিল নাড়-তে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে, তেলেঙ্গানায় ২৬ জনে এবং কর্ণাটকে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত পাঞ্জাবে কোভিড-১৯ ভাইরাসে ১৯ জন, জম্বু ও কাশ্মীরে ৮ জন, কেরালা ও হরিয়ানায় ৪ জন করে এবং ঝাড়খন্ড ও বিহারে ৩ জন করে মারা গেছে। মন্ত্রণালয়ের উপাত্ত অনুযায়ী, মেঘালয়, হিমাচল প্রদেশ, উড়িষ্যা ও আসামে একজন করে মারা গেছে।
প্রসঙ্গত, চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট বিশ্বমহামারি কোভিড-১৯ এ শুক্রবার (১ মে) পর্যন্ত ভারতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪৩ জন, মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ১৫৪ জনের এবং চিকিৎসা নিয়ে নিয়মিত জীবনে ফিরে গেছেন ৯ হাজার ৬৮ জন।