ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কফিনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আমাজন অঞ্চলের শহর মানাউসে কয়েকদিনের মধ্যে এত বেশি মানুষ মারা গেছে যে, পর্যাপ্ত কফিন জোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না প্রস্তুতকারীদের পক্ষে। ফলে প্রিয়জনের লাশকে ঠিকমতো কবরস্থ করতে পারছে না শোকার্তরা। কেউ কেউ গণকবরে না গিয়ে মৃতদেহ পুড়ে ফেলতেও বাধ্য হচ্ছেন। খবর আল জাজিরার। ব্রাজিলে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার। দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে করোনাবিধ্বস্ত এই দেশ। মানাউসে কোনো কফিনই পাওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় অন্ত্যেষ্টিঃক্রিয়া হোম অ্যাসোসিয়েশন ২ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূরের সাও পাওলো থেকে কফিন আনতে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছে। মানাউসের সঙ্গে দেশের আর কোনো শহরের সড়ক, রেল কিংবা নৌযোগাযোগ নেই। ব্রাজিলে করোনার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই দৈনিক উচ্চহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। মৃত্যুর ব্যাপকতা রোধে সরকারের ব্যর্থতারও খবর শোনা যাচ্ছে। দেশটির বিচার বা আইনমন্ত্রী বলসোনারোর বিরুদ্ধে অনধিকারচর্চা ও নাক গলানোর অভিযোগ এনে পদ ত্যাগ করেছেন।বলসোনারো অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পদচ্যুত করে নিজের দোষ স্খালনের চেষ্টা করেছেন। মানাউস শহরটি প্রাকৃতিকভাবে চারদিক থেকে জঙ্গলবেষ্টিত। বিশলাখ অধিবাসীর এই শহরে মৃত্যুহার বেশি হওয়ার পেছনে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জাম না পাওয়াকেই দায়ী করলেন ব্রাজিলিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অভ ফিউনারেল সার্ভিস প্রোভাইডার্সের প্রেসিডেন্ট লরিভাল পানহোজ্জি। ৩০ এপ্রিল ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণারয় জানায়, দেশের আমাজন অঞ্চলে ৫ হাজার ২০০ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৪২৫ জন। তবে আক্রান্ত ও মৃতের প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। শহরের মেয়রসূত্রে জানা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে শহরে দৈনিক ২০ থেকে ৩৫ জনের মৃত্যুর কথা জানা যেত। কিন্তু করোনা মহামারি হয়ে দেখা দেয়ার পর থেকে প্রতিদিন সবচেয়ে কম মৃত্যুর সংখ্যাও ১৩০ এর কম নয়।