পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে দীর্ঘদিন হতে একটি দুষ্ট চক্র রাতের আঁধারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরকারি রাস্তার গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ এপ্রিল দিবাগত রাত প্রায় দেড়টার দিকে আটোয়ারী- রুহিয়া সীমান্ত উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর শিমুলতলা নামক এলাকায় পাকা রাস্তা সংলগ্ন সরকারি বিশাল আকারের একটি ইউক্লিপটাস গাছ করাত দিয়ে কেটে ৫টি খন্ড করে। খবর পেয়ে আটোয়ারী থানা পুলিশ বন বিভাগের কর্মচারী আব্বাস আলী সহ ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হওয়ার আগেই দু’টি খন্ড সরিয়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রটি সটকে পড়ে। ওই সময় ঘটনাস্থল হতে পুলিশ অবশিষ্ট ৩টি খন্ড থানায় নিয়ে আসে। পরদিন সকাল বেলা বন বিভাগের কর্মচারী আব্বাস আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গাছের ৩টি খন্ড থানায় জমা আছে এবং সরকারি গাছ অবৈধভাবে কাঁটার অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এদিকে ঘটনার দিন পর্যন্ত গাছ কাঁটার সাথে জড়িত এরকম ১২ জনের নাম পাওয়া গেছে। ৩মে উপজেলা বন বিভাগ অফিসে মামলার খবর নিতে গিয়ে দেখা যায় সম্পুর্ণ ভিন্ন চিত্র। জানাযায়, গাছ কাটা বিষয়ে কোন মামলা হয়নি, তারপরও বন বিভাগের পঞ্চগড় জেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হাই থানায় জব্দকৃত কাঠের খন্ড ৩টি ২মে তার নিজের জিম্মায় নিয়েছেন। কাঠের খন্ড গুলো থানা থেকে বন বিভাগে নিয়ে রাখা হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, থানার চেয়ে কি বন বিভাগ বেশী নিরাপদ ? কর্মচারী আব্বাস আলীর কাছ থেকে গাছ কাঁটার সাথে জড়িতদের নামের তালিকা চাওয়া হলে তিনি বলেন, স্যার ( রেঞ্জ কর্মকর্তা) আসামীর নামের তালিকা সহ আমার হাতে থাকা সমস্ত নথিপত্র নিয়ে গেছেন। আমার হাতে কোন কাগজপত্র নাই। এ ব্যাপারে আটোয়ারী থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ ইজার উদ্দীন বলেন, পঞ্চগড়ের বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল হাই বিভাগীয় মামলা করবেন বলে গাছের খন্ডগুলি তার জিম্মায় নিয়েছেন এবং কাঠের খন্ডগুলি থানা থেকে নিয়ে গেছেন। রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল হাইকে দু’দিন থেকে মুঠো ফোনে ( ০১৮২৫৫৪৪৫৩১) একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ইতঃপূর্বে সরকারি গাছ অবৈধভাবে কাঁটার অপরাধে অসংখ্য বিভিন্ন প্রজাতির কাঠের গাছ বা খন্ড বনবিভাগ কর্তৃক জব্দ করা হয়েছিল। সচেতন মহলের প্রশ্ন, এ পর্যন্ত বন বিভাগে কয়টি মামলা হয়েছে ? জব্দকৃত কাঠ গেল কোথায় ? বন বিভাগের রহস্যজনক ভুমিকা নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।