শেরপুর রেজিস্ট্রি অফিস বাজার ডিজে হাইস্কুল মাঠে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার ক্ষোভে ফুসে উঠছেন ক্রীড়ামোদি ও সচেতন মহল। আর এ নিয়ে ফেসবুকেও ঝড় তুলেছেন সচেতন অনেকেই। কাদের স্বার্থে মাঠ নষ্ট করার জন্য প্রশাসন লোকজন উঠে পড়ে লেগেছে সেটাও জানতে চায় মানুষ।
জানাযায়, শেরপুর ডিজে হাইস্কুল মাঠ টি দীর্ঘদিন যাবৎ অবহেলায় পড়েছিলো। সামান্য বৃস্টি হলেই সেখানে পানি জমে থাকতো। স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ হাবিবর রহমানের পরামর্শে শেরপুর থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) বুলবুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনুদানে মাঠ টি সম্প্রতি সংস্কার করা হয়। এই মাঠে বাজার স্থানান্তর করা হলে মাঠের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কারণ বাজারের পানি ও বর্জ অপসারণের কোন ব্যবস্থা নেই। কয়েকদিনের মধ্যে পঁচা দুর্গন্ধে মাঠের পরিবেশ নস্ট হবে।
একাধিক এলাকাবাসী জানিয়েছেন, মাঠ সংস্কারের পর সেখানে ঘাস লাগানো হয়েছে। মাঠটি এখন সবুজ-শ্যামলীময়ে পরিপূর্ণ। করোনা প্রভাবের আগে এখানে স্থানীয়রা বিকাল থেকে রাত অবধি স্বাস্থ্যকর হাওয়া অনুভব করতো। তাছাড়া আমাদের বাচ্চারা সেখানে বিকেলে শরীর চর্চা করে। নিয়মিত বাজার বসলে সে অবস্থা আর থাকবেনা।
এদিকে বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমরা বারোদুয়ারী হাটের মধ্যেই ভালো ছিলাম। ডিজে হাইস্কুল মাঠে খোলা আকাশের নীচে দোকান পরিচালনা করা অনেক কষ্ট হবে। সামান্য ঝড়-বৃস্টিতে দোকানের পণ্য নস্ট হবে। তারা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন।
শেরপুরে শত শত ক্রীড়ামোদী মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ঐতিহ্যবাহী শেরপুর ডিজে হাইস্কুল খেলার মাঠটি কয়েক দিন আগে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সংস্কার করা হযেেছ। মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সেখানে দৈনিক বাজার বসানোর সিদ্ধান্ত অনেকেই ভাল ভাবে মেনে নিতে পারেনি। বারোদুযারী হাটের মধ্যেই পর্যাপ্ত পরিমাণে জায়গা রয়েছে, সেখানে শুধু পরিকল্পিত ভাবে দৈনিক বাজার লাগাতে পারলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। তাছাড়া মাঠটি আবারো খেলা অনুপযোগী হয়ে পড়লে খেলেয়াররা প্রাক্টিস করতে পারবেনা। আর তারা যদি খেলাধুলা করতে না পাড়ে তাহলে তাদের বিপথে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন ক্রিড়া প্রেমীরা।
আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি বাধন কর্মকার কৃষ্ণ তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি দয়া করে শেরপুর ডি.জে হাইস্কুল খেলার মাঠে হাট-বাজার না বসিয়ে অনত্র জায়গা নির্ধারণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
অপরদিকে শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাংস্কৃতিক কর্মী সৌরভ অধিকারী শুভ তার ফেসবুকে লিখেছেন শেরপুরের সম্মানিত জনপ্রতিনিধিগণ, উপজেলা প্রশাসন, বিশেষ করে শেরপুর থানা কর্মকর্তা ইনচার্জ জনাব হুমায়ুন কবীর এবং তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত জনাব বুলবুল ইসলাম সহ অনেকের প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে এই খেলার মাঠ’টির সংষ্কার করা হয়। তাই এই ডি.জে হাইস্কুল খেলার মাঠ’টির সৌন্দর্য ধরে রাখতে দয়া করে সেখানে হাট-বাজার না বসানোর জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
সাংবাদিক রাশেদুল হক তার ফেসবুক ওয়ালে ডিজে হাইস্কুলের মাঠ সংস্কার চলাকালীন তোলা একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, "অনেক সাধনা করে অবহেলিত ডিজে স্কুল মাঠ সংস্কার করা হয়েছে তাই এই মাঠে হাট না বসানোর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।”
কিন্তু এ বিষয়ে যখন শেরপুরের সচেতন মহলে চলছে নানা গুনজন কিন্তু তখন উপজেলা ক্রিড়া সংস্থা অনেকটাই নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে সচেতন মহলে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ জানান, ডিজে হাইস্কুল খেলার মাঠ থেকে বাজার স্থানান্তরের জন্য নতুন করে চিন্তা ভাবনা করছি।