কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলায় নেক ব্লাস্টার রোগে আক্রান্ত প্রায় ৩হাজার হেক্টর বোরো ধান ক্ষেত, দিশেহারা কৃষক।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে গেলে, নলবাড়ি গ্রামের রহমালী, হাবিবুর, সাইদ, রহিজ নামে ৪জন ক্ষুদ্র কৃষক তিন একর ২৮শতাংশ জমিতে ২৮নম্বর বোরো ধান আবাদ করেছে। ক্ষুদ্র কৃষক ঐ ফসল দিয়ে এক বছর সংসার চলে তাদের। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে তার বোরো ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও বন্যার পর এবার ব্লাস্টার রোগে ফসল না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে রৌমারী উপজেলার কৃষকরা। বোরো ধান রোপনের শুরুতে ভালো ফসল দেখে কৃষক খুশি হলেও এখন কৃষকের চোখে মুখে হতাশার ছাপ দেখা দিয়েছে। সরকারী ভাবে আর্থিক সহযোগিতা চায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা য়ায়, এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে নয় হাজার আটশত ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার হেক্টর বোরো ধানের জমি নেক ব্লাস্টার রোগে আক্রামন হওয়ায় লক্ষমাত্র অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার টাপুরচর গ্রামের জিয়াউর রহমান বলেন, আমি এক একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম ব্লাস্টার রোগে আক্রমন হওয়ায় কাঁচা ধান কেটে গো- খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করছি। মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা আমাদের কাছে আসেনা।
বাইটকামারী গ্রামের ফরিজুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, বসিরউদ্দিন বলেন, আমারা ক্ষৃদ্র কৃষক বোরো আবাদ করে সারা বছর ঘরের ধানের ভাত খাই। এবার ধানের র্শীষ মরা রোগে সব শেষ হয়েগেছে। কুষি অফিসের কোন বিএস(উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) মাঠ পর্যায়ে আসে নাই, সরকার বেতন দেয়, ওরা ঘরে বসে বউ পলাপান নিয়া সুখে থাকে, কৃষকের খবর নাই।
মধ্যেরচর গ্রামের আবুল হাশেম, হাবিবুর রহমান জানান, সারা উপজেলায় বোরো ধানে ব্লাস্টার রোগে আক্রান্ত হলেও কৃষি বিভাগ থেকে কোনো উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষদের পরামর্শ দিতে মাঠে আসে নাই। তাদের উদাসীনতার কারণে কৃষদের সর্বনাশ হয়েছে।
বাগুয়ারচর গ্রামের ছাইদুর রহমান বলেন, আমাগো ওয়ার্ডে বিএস (উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) বোর মৌসুমে দেখিনাই, কোন পরামার্শ না পেয়ে, বাজারে সারে দোকান থেকে ঔষধ কিনে দুই বার ঔষধ দিয়ে স্প্রে করে কোন লাভ হয় নাই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহারিয়ার হোসেন এ বিষয়ে বলেন, সারা বাংলাদেশেই নেক ব্লাস্টার রোগের আক্রমন হয়েছে। আমারা যথা সাধ্য চেষ্টা করেছি, এ রোগ প্রতিরোধ করা জন্য। কৃষকদের সচেতনতার অভাবে এ রোগে আক্রমন বেশি হয়েছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাইকিং করে কৃষকদের জানানো হয়েছে।