দিনাজপুরের বীরগঞ্জে করোনাভাইরাস প্রভাবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবীর পাশাপাশি রিকশাচালকরাও সংকটে পড়েছে। চিরচেনা বীরগঞ্জ পৌরশহরের সবার চোখের সামনেই কেমন বদলে গেল। সামর্থ্যবানরা এ সময়ে ঘরে থাকতে পারলেও কেবল দুমুঠো খেয়ে পরে বাঁচতে তীব্র ঝুঁকি নিয়েই এদের অনেকেই নামছেন সড়কে। তবে এত কিছুর পরেও যাত্রী না থাকায় জুটছে না সংসার খরচ। ক্ষুধা আর শঙ্কায় দিনাতিপাত করা মানুষগুলোকে নিয়ে চিন্তা করেন না কেউ। বীরগঞ্জ উপজেলার ৬নং নিজপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের হাবলুহাট জামাইক্ষেত গ্রামের মৃত মধু সুধন রায়ের ছেলে রিকশাচালক সুভাষ চন্দ্র রায় (৫০) বলেন,কখনো এইরকম অবস্থা দেখি নাই। দিনকাল ধীরে ধীরে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে বীরগঞ্জ পৌরশহরের নানা অলিগলি ঘুরে তখনও জোটেনি কোনো যাত্রী। ২মেয়ে ১ছেলে নিয়ে পাঁচ সদস্যর সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য না থাকলেও ছিলনা খুব একটা টানাপোড়ন। কিন্তু মহামারি করোনা স্বাবলম্বী এ মানুষটিকে করেছে অন্যের মুখাপেক্ষী। বৃদ্ধ বয়সে এ ধাক্কাটা বুঝি,অনেকটা জোরেশোরে লাগলো খেটে খাওয়া-শ্রমজীবী মানুষের জীবনে। আছে ভয়, আছে শঙ্কা। তবুও সংসারের খরচ জোগাতে বাধ্য হয়েই বের হতে হচ্ছে পথে। তবে প্রতিদিন যে পথ যোগাতে সংসারের খরচ, চিরচেনা সেই পথই আজ অচেনা। তিনি চোখেও ঠিক মতো দেখতে পান না। নেই কাঙ্ক্ষিত যাত্রীর দেখা। কেউ কেউ বাইরে বেরিয়ে এলে বীরগঞ্জ বিজয় চত্বর, কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এবং তাজ সিনেমাহলের সামনে অলস পড়ে থাকা তিন চাকার বাহনগুলোর মতোই থমকে গেছে বেশিরভাগের ভাগ্য। জুটছে না তিন বেলা আহার। নেই বিকল্প উপার্জনের পথও। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। ছন্দহীন, বিবর্ণ। রিকশাচালক সুভাষ আরও বলেন, দীর্ঘ দু'মাস থেকে এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের ত্রাণ সামগ্রী পৌচ্ছে দেননি। ইউপি সদস্য আমার বাড়িতে এসে তিন-চারবার ভোটার আইডির ফোটো কপি নিয়ে গেলেও ত্রাণ সহায়তা আসছে না। আমি ইউপি চেয়ারম্যান খালেকের কাছে বেশ কয়েকবার খাদ্য সহায়তা চায়তে গেলে তিনি খালি হাতে ফিরয়ে দেন। প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে ৬০-৭০টাকা রোজগার দিয়ে আমার পাঁচ সদস্য সংসার চলাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।