শতবর্ষী মোসা. ফাতেমা বেগম পাননি কোন বয়স্ক বা বিধবা ভাত বা সরকাার ঘোষিত কোন সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা। ফাতেমা বেগমের বাড়ি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে। তার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর (১৯১৮২৯১৫৬৭৩০০০০০১) অনুযয়িী জন্ম তারিখ ৬ মে ১৯১৮ সাল। তার বড়পুত্র মো. মোফাজ্জেল মোল্যা জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ( ২৯১৫৬৭৩০৫৬৯৪১) অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৫ জানুয়ারি ১৯৫৭ সাল।
জানাগেছে, মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের তারাপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত. মোকাদ্দেছ মোল্যর স্ত্রী মোসা. ফাতেমা বেগম বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতা কোন টাই পাননি। এমনকি সরকার ঘোষিত সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা গুলির মধ্যে প্রাপ্য কোন সুবিধাই পান নাই।
ফাতেমার পুত্রবধু হাছিনা বেগম জানান, আমার শ্বাশুড়ির বর্তমানে এক ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। তার প্রথম সন্তান মেয়ে। এরপর কয়েক পুত্র সন্তান মারা যায়। আমার স্বামী তার একমাত্র পুত্র সন্তান। তাদের শুধু প্রায় ৫শতাংশের জমির উপর দুটি ঘর আছে। তার স্বামী মোফাজ্জেল বর্গাজমি চাষাবাদ করেন। আমরা কোন দিন সুযোগ সুবিধা পায়নি। এবার এই ওয়ার্ডের মেম্বর আতিয়ার রহমান আমার শ্বাশুড়ির একটি বয়স্ক ভাতা করার জন্য কাগজপত্র সমাজ সেবা অফিসে জমা দিলেও তা পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ৪নং ওয়ার্ড মেম্বর মো. আতিয়ার রহমান জানান, ফাতেমার বয়স প্রায় ১০২ বছর। সে বয়স্ক ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত। আমি তার কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহিদুল হাসান টিপু এবং সমাজ সেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা বয়স্ক ভাতা ফাতেমাকে দেননি।
এ ব্যাপারে নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল হাসান টিপু জানান, আমার নওপাড়া ইউনিয়নের সকল বয়স্ক লোকরে ভাতা হলে আমি খুশি। বিষয়টি হলো আমি ফাতেমার ভাতাটি দেওয়ার জন্য সমাজসেবা অফিসে জমা দিয়ে ছিলাম কিন্তু সমাজ সেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা কার্ডটি কেটে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সমাজ সেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা জানান, চেয়ারম্যান সাহেব তিনি নিজেই এই কার্ডটি কেটে দিয়েছেন। তাকে বারবার বলার পরেও তিনি শুধু তার নিজের ওয়ার্ডে ছাড়া এবং তার সাথে যারা ঘোরা ফেরা করেন তাদের পরিবারের মধ্যে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত। চেয়ারম্যান সাহেবের নিজের ওয়ার্ডে এবার নতুন ৪০টি কার্ড দিয়েছেন। বাকিরাগুলি ওঁর আরদালীদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। আমি কোন কার্ড কাটতে পারিনা বা কাটি নাই।
উল্লেখ নওপাড়া ইউনিয়নে বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও সরকারি ত্রাণ এবং সরকারের খাদ্য বান্ধব রেশন কার্ডের ব্যাপারে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে গত ৭মে ভুক্তভোগীরা বিক্ষোভ সমাবেশও করেছেন।