রেনু পোনা ও মৎস্য উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা। হাজার হাজার মৎস্য চাষী ও ব্যবসায়ীরা এখান থেকে মাছ ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয়ের জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে বড় মাছ ও রেণু পোনা উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলায় প্রায় ৮০টি হ্যাচারীর মধ্যে প্রায় ৫০টি হ্যাচারী বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বেকার হতে চলেছে মওসুমী পোনা বিপননকারী, চাষী, ব্যবসায়ী ও মৎস্য উৎপাদন কাজে নিয়োজিত কয়েক হাজার শ্রমিক। গত বছর এসব হ্যাচারী গুলোতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যে ২ লাখ কেজি রেণুপোনা উৎপাদন হয়েছিল। এবার করোনার প্রভাবে তা সম্ভব হয়নি। এ উপজেলার হ্যাচারী ও মৎস্য পোনা খামার গুলোতে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করতো কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে হ্যাচারী ও খামার গুলোতে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার মৎস্য কাজে নিয়োজিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। বেকার এসব শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এছাড়াও হ্যাচারী মালিক ও মাছ চাষীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখে পড়েছে। এখানকার হ্যাচারী গুলোতে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভারকার্প, গ্রাসকার্প, ব¬াককার্প, বিগহেড, থাইসরপুটি, সরপুটি, জাপানি, মিররকার্প, মনোসেক্স তেলাপিয়া, তারাবাইন, মাগুর, বিগহেড মাগুর, কৈ, দেশি বিদেশি শিং, পাঙ্গাস, চিতল, আঁইড়, গোলসা, ট্যাংরা, পাবদা ইত্যাদি দেশি ও বিদেশী মাছের রেণু পোনা উৎপাদন হয়। এসব উৎপাদিত রেনু পোনা মাছ বিক্রি হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে পোনা মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়। দেশ ব্যাপী মহামারী করোনার প্রভাবে গনপরিবহন বন্ধ হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত রেনু পোনা কিংবা বাজারজাত মাছ কোথাও যেতে পারছে না। এতে করে মৎস্য চাষী ও ব্যবসায়ীরা দুরবস্থায় পড়েছে। উপজেলা ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় ১০হাজার মৎস্য চাষী পুকুরে মাছ চাষ করতো তারাও আজ থমকে গেছে। নেই তাদের তেমন উৎপাদন কিংবা বেচা-কেনা। সব মিলে উপজেলার হ্যাচারী মালিক, মৎস্য চাষী, ব্যবসায়ী ও মৎস্য চাষে নিয়োজিত কয়েক হাজার পরিবার ব্যাপক ক্ষতি সহ কর্মহীন হয়ে পড়েছে।