বগুড়ার শেরপুরের খামারকান্দি গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে আদালতে মামলা চলাকালীন সময়ে বিজ্ঞ আদালত ১৪৪/১৪৫ ধারা জারী করেন। ওই আদেশ উপেক্ষা করে প্রতিপক্ষ হাফিজার রহমান ও মোফাজ্জলসহ কয়েকজন ১১ মে সোমবার সকালে জাবেদ আলী ও তার ভাই ছাবেদ আলীর ঘরবাড়ি ভাংচুর করে পুকুরে ফেলার দেয়। এ ঘটনায় শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
অভিযোগ ও মামলা সুত্রে জানা যায়,উপজেলার খামারকান্দি গ্রামের মৃত আলাল উদ্দিনের ছেলে মো. ছাবেদ আলী কয়েক বছর আগে খামারকান্দি মৌজার জেএলনং ১৩৪, সিএস ২২৮, এমআরআর খতিয়ান ৪১৫, সাবেক ৬৫৪ দাগে পিতার কাছ থেকে ১৬৬৪নং দলিলমুলে ৯ শতক ও ৪১৫ এমআরআরের একই দাগের দাবীদার জমির উদ্দিনের ছেলে হায়দার আলীর কাছ থেকে ৫৩০৯ নং কোবলা দলিলমুলে ১ শতক জমি ক্রয় করেন। মোট ১০ শতক জমির উপর ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস ও সবজী চাষ করে আসছেন। এছাড়াও ওই দখলীয় সম্পত্তির উত্তর-পূর্ব কোণে তার বোন জিন্নাতন নাহারের কবর দেয়া হয়েছে বলে এলাকাবাসীসহ ভূক্তভোগী ছাবেদ আলী জানান।
এদিকে স্বত্ব ভোগদখলীয় সম্পত্তি বেদখল দিতে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ হায়দার আলীর ছেলে হাফিজার রহমান, মৃত জালাল মোল্লার ছেলে আকরাম হোসেন ওরফে লেবু, মৃত আফছার আলী ফকিরের ছেলে আবদুস সাত্তারসহ ১০/১২ জন মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষরা প্রায় দেড়মাস পূর্বে ছাবেদ আলী ও তার ভাই জাবেদ আলীসহ তাদের পরিবারকে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ফেলার হুমকীসহ নানা অত্যাচার ও মারধর করে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ছাবেদ আলী বাদি হয়ে প্রতিপক্ষের ১০ জনকে বিবাদী করে গত ৫ মার্চ বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১০৬/২০২০(শেরঃ) মামলা দায়ের করেন।
অথচ ছাবেদ আলীর মামলার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত বাদীর মামলার বিবরণে উল্লিখিত নালিশী সম্পত্তিতে প্রতিপক্ষ ১০ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪/১৪৫ ধারা আদেশ দেন। একইসঙ্গে নাশিলী সম্পত্তিতে বাদির স্বত্ত্ব দখলীয় নিয়ে সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে শেরপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) এবং শান্তি শৃঙ্খলা বলবৎ রাখতে শেরপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জকে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। এ মামলায় ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ মৃত হায়দার আলীর ছেলে হাফিজার রহমান ও মোফাজ্জলসহ ২০/২৫জন ক্ষিপ্ত হয়ে ১১ মে সোমবার সকাল ৬টার দিকে ছাবেদ ও জাবেদ আলীর ২টি টিনের ঘর, ছাপড়া, আসবাবপত্র ভাংচুর করে পুকুরে ফেলে দিয়ে ওই জমি দখল নিয়ে হালচাষ করেছে।
তাছাড়া বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে ১৪৪/১৪৫ ধারা অদ্যাবধি বলবৎ থাকলেও প্রতিপক্ষরা ওই নাশিলী জমি থেকে বাদী ছাবেদ আলী ও জাবেদ আলীর ঘরবাড়ি ভেঙ্গে উচ্ছেদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও থানা পুলিশের এসআই ওসমান গনী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে একাধিকবার থানায় বসে শালিশ দরবারের নামে কালক্ষেপন করে বলে ভুক্তভোগী জাবেদ আলী জানান।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ঘরবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পেয়েছি. তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।