ঘাটাইলের আনেহলা ইউনিয়নে ৩২টি গ্রামে ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কারো আবাদি জমির ধান, সবজির বাগান, অনেকের ঘর-দরজা ভেঙ্গে গেছে।
সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের বাইসকাইল, ডাকিয়াপুটল, যুগিহাটি, আনেহলা, বগাজান, চেংটা, শিমলা, মাকেশ্বর, ষাটশালা সহ ইউনিয়নের ৩২টি গ্রামে প্রায় ১৫শ বিঘা জমির পাকা ধান ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ইউনিয়নের বাইসকাইল, বগাজান, ডাকিয়াপুটল, যুগিহাটি, আনেহলা ও ষাটশালা গ্রামে।
বাইসকাইল গ্রামে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক নিধীর চন্দ্র বর্মণ জানায়, ধার কর্য করে ৪৮শতক জমির উপর (ধুম্বা) সবজীর বাগান করেছিলাম। রবিবারে ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে বাগানের গাছ উপড়ে ফেলে দিয়েছে। তাতে আমার সকল আশা ভরসা শেষ হয়ে গেছে।
একই গ্রামের ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন জানায়, অনেক আশায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ইরি ধানের স্ক্রিম করেছিলাম। রবিবারের ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে জমিতে গাছ আছে কিন্তু গাছে অধিকাংশ ধান পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অপরদিকে একটা সবজির বাগান ছিল তাও শীলাবৃষ্টিতে মাটির সাথে মিশিয়ে গেছে। সাথে রাস্তার গাছ পড়ে আমার ঘর ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে।
একই গ্রামের উত্তম সরকারের ছেলে আবদুল মালেক, গফুর মন্ডলের ছেলে আবদুল করিম, শেফাতুল্লার ছেলে আবদুল বাছেদ, দারোগালীর ছেলে আলীম, কিতাব আলীর ছেলে মিনহাজ, মোহাম্মদ আলীর ছেলে মালেক, আকবর হোসেনের ছেলে হযরত আলী, নূর হোসেনের ছেলে আবদুল সালাম ও আবুল হোসেন সহ ঐ গ্রামের সুলতান, সমশের, মজিবর, ও গীয়াস উদ্দীনসহ সকলেই জানায়, আমাদের চাষ করা জমিতে ধান গাছ আছে কিন্তু গাছে কোন ধান নেই। সারাবছর কী খেয়ে বেঁচে থাকবো বুঝতে পারছি না।
আনেহলা গ্রামে আবু বক্কর সিদ্দীকের ছেলে আমিনুর ইসলাম ও মকবুল হোসেনের ছেলে মজনু জানায়, আমরা দুইজনে ১১বিঘা জমির ইরিধান চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিলো। কিন্তু রবিবারের ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে আমাদের সকল চাওয়া পাওয়া শেষ করে দিয়েছে। সিংগুরিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় আতাউর রহমানের ছেলে লিয়াকত আলীর পাটের জমিতে ডাটা আছে কিন্তু পাট গাছের মাথা নেই। এভাবে ইউনিয়নের প্রায় সকলের ইরিধান, সবজির বাগান, পাটের জমি ও অনেকের ঘরদরজা ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এবিষয়ে আনেহলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তালুকদার শাহজাহান জানায়, করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে এমনিতেই ক্লান্তিকাল চলছে। তার মধ্যে রবিবারের ঝড় ও শীলাবৃষ্টিতে ইউনিয়ন জুড়ে যেভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এ যেনো মরার উপর খড়ার গা পরেছে আমাদের উপর। কৃষকরা কীভাবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে বুঝতে পারছিনা। সরকারের সহযোগীতা না পেলে তাদের জীবিকার পথে বড় বাধার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।