বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার হরতকিতলা গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের মারধরে প্রতিবন্ধি ও নারীসহ একই পরিবারের পাঁচজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আহত নাসির হাওলাদার বলেন, ৪ মে সকালে মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউয়িনের হরতকিতলা গ্রামে নিজ বাড়িতে আমরা সকলে অবস্থান করছিলাম। জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিবেশী ফরিদ হাওলাদার, হাচান হাওলাদার, মিজান হাওলাদার, শহিদুল ইসলামসহ ৮-৯জন ধারালো অস্ত্র, দা, লাঠি ও শাবল নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এসে আমাদের উপর হামলা করে। আমার বড় ভাই চুন্নু হাওলাদার, তার স্ত্রী রাহেলা বেগম, পঙ্গু ভাই ইসমাইল হোসেন পান্না, আমি ও আমার স্ত্রী জেসমিন বেগমকে বেধরক মারধর করে। আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে। আমার পঙ্গু ভাই ইসমাইল হোসেন পান্নাকে টেনে হিচড়ে ফরিদ হাওলাদারের বাড়িতে নিয়ে পেয়ারা গাছের সাথে বেঁধে রাখে। একপর্যায়ে আমাদের পরিবারের অন্য সদস্যরা ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে মোরেলগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় পঙ্গু ভাই ইসমাইল হোসেন পান্না ও আমার স্ত্রী জেসমিন বেগমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। একটু সুস্থ্য হওয়ার পরে আমার বড় ভাই চুন্নু হাওলাদার ৮মে ফরিদ হাওলাদার, হাচান হাওলদারসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মোরেলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রহস্যজনকভাবে আমাদের মামলার কোন আসামীকে এখন পর্যন্ত আটক করেনি। প্রতিপক্ষরা এখনও আমাদের হুমকিধামকী দিচ্ছে। এই অবস্থায় তাদের ভয়ে নিজ বাড়িতেও অবস্থান করতে পারছি না।
মারধরের শিকার পঙ্গু ইসলমাইল হোসেন বলেন, জন্ম থেকে আমার দুটো হাত পঙ্গু। আমি ঢাকাতে একটি বাড়িতে দাড়োয়ান হিসেবে এবং আমার স্ত্রী অন্যের বাসায় কাজ করে। এভাবে আমরা জীবীকা নির্বাহ করি। করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ির মালিক বলভে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তোমরা আসবা। আমরা তাদের কথা মত বাড়িতে আসি। ঘটনার দিন সকালে আমরা জমিতে কাজ করতে যাই। ফরিদ হাওলাদার, হাচান হাওলদারসহ ৮-১০ আমাদের উপর হামলা করে। আমার একটি হাত ভেঙ্গে দেয়। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
আহত জেসমিন বেগম বলেন আমরা খুব অসহায়। ফরিদের পক্ষের লোকেরা কাস্টমসসহ বিভিন্ন সরকারি চাকুরী করে। তাদের টাকা আছে। নিজেরা অন্যায় করে টাকা দিয়ে সবকিছু সমাধান করে নেয়।আমরা সরকারের কাছে ন্যায় বিচার দাবি করি।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, হরতকিতলা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষই দুটো মামলা দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলন করা নাছির হাওলদারের ভাইয়ের মামলায় এজাহার নামীয় শাহজাহান হাওলাদার মন্টু নামের একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।