নাটোরের সিংড়ায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার রাত ৮টায় উপজেলার চামারী ইউনিয়নের গোটিয়া গ্রামের গৃহবধূ (৩৫) কে ধর্ষণের চেষ্টা করে এলাকার স্থানীয় দুই যুবক। পরে মঙ্গলবার বাদ এশা এক গ্রাম্য শালিসে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ৫০টা করে জুতার বাড়ি দিয়ে রফাদফা করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৭নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ফারুক হোসেন ও গ্রাম্য মাতবররা। এনিয়ে এলাকায় চলছে জোরগুঞ্জন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ৮টায় গোটিয়া গ্রামের এক গৃহবধূ ধান কাটা শ্রমিক ঠিক করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে গোটিয়া বাজারের জনৈক আবদুস সালামের বাড়ির পাশে তাকে একা পেয়ে একই গ্রামের যুবক জিহাদ আলী ও রুবেল হোসেন মুখ চেপে ধরে পাশের বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয় এক পথচারী এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি ধামা চাপা দিতে গ্রাম্য শালিসী জুতাপেটায় রফাদফা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন ও ৭নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি যুবক জিহাদ আলীর বিরুদ্ধে এক প্রতিবন্ধী মেয়েকেও ধর্ষণের অভিযোগ আসে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া হয়।
ধর্ষণ চেষ্টায় শিকার ওই গৃহবধূ বলেন, অভিযুক্ত জেহাদ ও রুবেল এলাকার প্রভাবশালী আ.লীগ নেতার নিকট আত্মীয়। তাই তাদের কোন বিচার নেই। আর শুনেছি থানা পুলিশ নাকি তাদের হাতেই থাকে।
চামারী ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ফারুক হোসেন বলেন, অভিযুক্তরা অল্প বয়সী হওয়ায় তাদের অভিভাবকদের ডেকে একটা মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। আর প্রাথমিক ভাবে কোন দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রাম্য প্রধানদের পরামর্শে কিছু শাস্তিও দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, অভিযোগ মহিলা একজন এ্যাবনরমাল (পাগলী)।
আর গ্রাম্য প্রধান ৭নম্বর ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, স্বাক্ষী আর জবান বন্দীতে ওই ছেলেরা কোন দোষী না। তারপরও যেহেতু একটা অভিযোগ এসেছে তাই সামাজিক ভাবে ৫০টা করে জুতার বাড়ি আর শত লোকের মাঝে অভিযোগ কারী মেয়ে ও মেয়ের বড় ভাইয়ের পা ধরে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। তবে তার দাবী অভিযোগকারী মহিলা কোন পাগলী নয় বরং ৬নম্বর স্বামী নিয়ে ঘর সংসার করে।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: নাসরিন বানু বলেন, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।