তানোরে বোরো ধান কাটা ও মাড়াই প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা। নিচু এলাকা হিসেবে ক্ষ্যাত বিল কুমারী বিলের প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা মাড়াই শেষে ঘরে তুলতে সক্ষক হয়েছেন কৃষকরা। তবে, উঁচু এলাকার ৮০ ভাগ জমির বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শেষ হলেও এখনো প্রায় ২০ভাগ ধান ঘরে তুলতে বাকি রয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, বাকি ধান গুলো ঘরে তুলতে না পারায় জমিতে পেকে থাকা বোরো ধান গত বৃহস্পতিবার রাতের ঝড় ও বৃষ্টিতে ক্ষতি গ্রস্থ্য হয়েছেন।
শুক্রবার (১৫ই মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিচু এলাকা বিলি কুমারী বিলের ধারের কামারগাঁ, তালন্দ, গোকুল, ধানতৈড়, গুবির পাড়া, কুঠিপাড়া, গোল্লাপাড়া, আমশো, জিওলচানপুর ও বুরুজ এলাকা এবং কালীগঞ্জ এলাকায় নিচু জমির প্রায় ৯০ভাগ ধানই কৃষকরা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।
বাকি ১০ ভাগ জমির ধান এখনো কাটা হয়নি, এর মধ্যে অনেক জমিতে কেটে ফেলে রাখা ধান গুলো বৃহস্পতিবার রাতের ঝড় ও বৃষ্টিতে এলোমেলো ও ভিজে হাবুডুবু খাচ্ছে। ফলে এসব জমির ধান বৃহস্পতিবার রাতের ঝড় ও বৃষ্টির কারণে ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
অপর দিকে উঁচু এলাকা ক্ষ্যাত মুন্ডমালা, প্রকাশনগর, দুবইল, পাঁচন্দর, ইলামদহি, কৃষ্ণপুর, চিনাশো, মাদারীপুর, বাতাসপুর আজিজপুর, পারিশো, দুর্গাপুর, মির্জাপুর, কুজিশহর, সোমাসপুর, বেলপুকুরিয়া এলাকার প্রায় ৮০ ভাগ বোরো ধান কাটা ও মাড়াই করে কষ্টের ফসল বোরো ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে জমিতে পেকে থাকা ধানগুলো জমিতে সুইয়ে পড়েছে আর যেসব ধান কেটে জমিতে পেলে রাখা ছিলো সেগুলো এলোমেলো হওয়ার সাথে ভিজে গেছে। ফলে কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
স্বর্নপদক প্রাপ্ত আদর্শ কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে, ফলন নিয়ে কৃষকরা খুশি হলেও তুলনা মুলক ভাবে দাম একটু কম হওয়ায় কৃষকরা কিছুটা হতাশ। তিনি বলেন, এবছর নিচু এলাকার জমিতে প্রতি বিঘায় (৪০ কেজিতে ১মন) ২২ মন থেকে সর্বচ্চ ২৫ মন পর্যন্ত। অপর দিকে উঁচু এলাকার জমিতে ফলন হয়েছে প্রতি বিঘায় (৪০ কেজিতে ১মন) ১৮ থেকে সর্বচ্চ ২২ মন পর্যন্ত।
শুক্রবার (১৫ই মে) দুপুরের পর আমশো মথুরাপুর গ্রামের মৃত হোসেন শাহার পুত্র মোজাহার সাহাকে হাতে ধানের স্যামপুল নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। এ সময় তিনি বলেন ধান বিক্রি করে হাট-বাজারসহ ঈদের বাজার করবো তাই ধান বিক্রির জন্য আড়তে আড়তে ঘুরছি (২৮ কেজিতে ১মন) দাম বলছে মাত্র ৬শ’৮০টাকা। তিনি বলেন ৭শ’ টাকাতেও বিক্রি করতে পারছিনা।
তানোর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, তানোর উপজেলার নিচু এলাকার প্রায় ৯০ভাগ এবং উঁচু এলাকার প্রায় ৮০ভাগ ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। বৃহস্পতিবারের রাতের ঝড় ও বৃষ্টিতে ঘরে তুলতে বাকি থাকা ধান গুলোর মেতন কোন ক্ষতি হয়নি। তিনি আরো বলেন, এবছর ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা খুশি।
তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম বলেন, তানোর উপজেলায় এবছর ১৩হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। তিনিি বলেন, এবছর প্রতি হেক্টরে গড় ফলন সাড়ে ৬ মেট্রিকটন, অন্য বছরের তুলনায় এবছর ফলেন বেশি ভালো হয়েছে।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, কৃষকরা যেন ভালো দাম পেয়ে খুশি হতে পারেন, সেজন স্বচ্ছতার সাথে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের জন্য লটারীর ব্যবস্থা করে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু করা হয়েছে।