বার্ধক্যজনিত ও নানা জটিল রোগে সপ্তাহ ধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে শয্যাশায়ী বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা রহিম মাস্টার। রণাঙ্গনের অসীম সাহসী এই মুক্তিযোদ্ধার সুচিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার দাবি সহযোদ্ধা, পরিবার ও স্থানীয়দের।
১৯৭১ সালে দেশমাতৃকার টানে অস্ত্র হাতে জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন প্রাইমারীর স্কুল শিক্ষক আবদুর রহিম মোল্লা। বর্তমানে তিনি শিক্ষকতা থেকে অবসরে (এলপিআরে) রয়েছেন। তাঁর গ্রমের বাড়ি তানোর পৌর এলাকার রায়তার বড়শো গ্রামে। তিনি যুদ্ধকালিন সময়ে রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাঙ্কারে গোলাবারুদ সরবরাহ, সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধে রেখেছিলেন অসামান্য অবদান। বেশ কয়েকদিন ধরে ভালো নেই স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর সেনা রহিম মাস্টার।
এই মুক্তিযোদ্ধার সুযোগ্য সন্তান তানোর ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহায়ক আরিফ হোসেন জানান, নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তাঁর বাবার শরীরে। এখন হাঁটাচলার শক্তি হারিয়ে হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী। কথা বলার নেই তেমন শক্তিও। চার সদস্যের পরিবারে সীমিত আয়ে সম্ভব হচ্ছে না উন্নত চিকিৎসার।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেলেও সবটুকুই চলে যায় ওষুধ কিনতেই। উন্নত চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনার পাশাপাশি তানোর উপজেলাসহ দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন তানোর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক এই কমান্ডারের ছেলে আরিফ।
তানোর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ওহাব সরদার বলেন, স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম মাস্টার বার্ধক্যজনিত নানা জটিল রোগে অসহায় হয়ে হাসপাতালের বেডে শয্যাশায়ী। দেশ স্বাধীনের পর বিরোধী মতাদর্শের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বঙ্গবন্ধুর প্রতি ছিলো আবদুর রহিম মাস্টারের অকৃত্রিম ভালোবাসা। তাঁর উন্নত চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো জানান, মুক্তিযোদ্ধা রহিম মাস্টারের ছেলে আরিফ তার অফিসে চাকরি করে। মুক্তিযোদ্ধা বাবার অসুস্থতার কারণে তাকে কয়েকদিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে। তবে, আবেদন করলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা রহিম মাস্টারকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।