করোনার সংক্রমণ রোধে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অসহায়দের খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করছেন কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ যোদ্ধারা। করোনার দুর্যোগকালীন ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহর-দুর্গম চরাঞ্চলে দিনে কিংবা রাতে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে এই সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
দারিদ্রপীড়িত হিসেবে খ্যাত জেলা কুড়িগ্রাম। করোনার সংক্রমণে কাজ-কর্ম না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন এই জেলার নি¤œবিত্ত এবং মধ্য বিত্তরা। যারা দিন এনে দিন খায় এমন পরিবারের সংখ্যাই বেশি। দুর্যোগকালিন সময়ে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কখনো গাড়িতে আবার কখনো পায়ে হেঁটে মানুষের বাড়ি-বাড়ি খাদ্য সামগ্রি পেঁৗঁছে দিচ্ছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের যোদ্ধারা। করোনা সংক্রণ রোধে সামাজিক দুরত্ব বজায় নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষের খাবারের যেন সংকট না হয় সেজন্য জেলা পুলিশের যোদ্ধারা দিনে কিংবা রাতে ছুটে যাচ্ছেন মানুষের ঘরের দরজায়। অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিলেও মধ্যবিত্ত অসহায় পরিবারগুলো লোক লজ্জার ভয়ে ত্রাণ কিংবা সহযোগিতা নিতে যান না। তাদের কথা ভেবেই কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মোবাইল, এসএমএস, ফেসবুক এবং ম্যাসেঞ্জারে নাম ঠিকানা দিলেই পুলিশ যোদ্ধারা তাদের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী। শহর-গ্রামের পাশাপাশি দুর্গম চরাঞ্চলবাসীও এই সুযোগ পাচ্ছেন। আইনশৃংখলা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পুলিশের এই কার্যক্রম জেলাবাসীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। করোনা মোকাবেলায় এমন ব্যতিক্রমী কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের কাছে আস্থার জায়গা করে নিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ।
করোনার প্রভাবে কারণে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মানুষের কাছে খাবার পৌঁছাতে পেরে খুশি পুলিশযোদ্ধারা। প্রতিদিন রাতে তারাবির শেষে ৮/১০জনের একটি টিম খাদ্য সামগ্রী নিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছেন বাড়ি-বাড়ি গিয়ে। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং পরিবারকে সময় না দিয়ে অসহায় পরিবারের মাঝে দাঁড়াতে পেরে খুশি করোনা মোকাবেলার সাহসী সম্মুখ এই যোদ্ধারা।
জেলা পুলিশের ব্যক্তিগত উদ্যোগ প্রায় দু’মাস ধরে চাল,ডাল,আটা,তেল,লবণ,আলুসহ বিভিন্ন পণ্য দিয়ে একটি প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। জেলার ১১টি থানায় ত্রাণ সহায়তার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে হরিজন সম্প্রদায়,দলিত সম্প্রদায়,শ্রমিকসহ প্রায় ০৪ সহ¯্রাধিক পরিবার ছাড়াও সামাজিক মাধ্যমে এক হাজার মধ্য বিত্ত পরিবারকে এই খাদ্য সামগ্রি দেয়া হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব যতদিন থাকবে ততদিন জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এই সহায়তা চালু থাকবে বলে জানান পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।