কুয়াকাটায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের বাইরে সৈকত পাশে প্রায় এক হাজার পরিবার জলোচ্ছ্বাসের চরম ঝুঁকিতে বসবাস করছে। অস্বাভাকি জেয়ারে এদের ঝুপড়িঘরসহ ঘরের মালামাল ভেসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আর অতি প্রবল ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এসব পরিবারের সকলকে যথাসময় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা নিশ্চিত করতে না পারলে প্রাণহানির ঝুঁকি পর্যন্ত রয়েছে। কুয়াকাটা পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসন, সিপিপির সদস্যরা পুলিশের সহায়তায় এসব দরিদ্র মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার সকল প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু এসব মানুষ জীবনের চেয়ে তাঁদের ঝুপড়িঘরের মালামাল, জিনিসপত্র রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে। সিপিপির সদস্যরা সচেতনতামূলক মাইকিং করছে, কিন্তু এসব মানুষ তা আমলে নিচ্ছেনা। সাগরে মাছ ধরা কেন্দ্রীক জীবন-জীবিকার ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র এসব মানুষ জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জীবনের জন্য লড়াই করছেন। তাঁদের কাছে নিজের এবং পরিবারের যতটুকু সম্পদ রয়েছে তা ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনিহা প্রকাশ করছে। কুয়াকাটা সৈকতের শুন্যপয়েন্ট থেকে দুইদিকে এসব জনগোষ্ঠীর বসবাস। কেউ কেউ রয়েছে মৌসুমি বাসিন্দা। প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় হাজার পরিবার নামকাওয়াস্তে ঝুপড়ির পাশাপাশি আলগা টিনসেটের ছোট্ট ঘর করে বসবাস করে আসছে। তাদের নিত্যদিন সকাল-বিকাল সাগরে ছুটতে হচ্ছে। অধিকাংশ খুটা জেলে। কেউ কেউ জাল সেলাই করার কাজ করছে। কেউ মাছ কেনার হকার। বাণিজ্যিক ফটোগ্রাফার। রয়েছে বোট চালক, ফুচকা, চটপটি, চা এবং ডাব বিক্রেতা। নানান ধরনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এসব পরিবারের একজন মানুষও আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা জানান, প্রায় এক হাজার পরিবারের ছোট্ট ঘর থাকলেও এদের অধিকাংশের বাঁধের ভিতরে ঘর রয়েছে। এরা অনেকে খামখেয়ালী করে থাকছে। তবে সবাইকে যথাসময়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হবে বলেও জানালেন মেয়র। তবে সৈকতের ওয়াটার লেভেলের কাছে বসবাস করা বহু ছোট্ ঘরের বাসিন্দারা জানান, তারা এখন পর্যন্ত জানে না যে সাত নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেয়া হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, বাঁধের বাইরের সকল মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র নিরাপদে থাকার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।