ক্রিকেট ম্যাচের স্কোরলাইন ইতিহাসে একবারই হয়েছিল ফুটবলের মতো, ‘ভারত ৩-০ পাকিস্তান!’ ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ টাই হওয়ার পর ‘টাইব্রেকার’ জিতেছিল ভারত। টাই ম্যাচে জয়-পরাজয় বের করার সেই পদ্ধতির অফিসিয়াল নাম ছিল ‘বোল-আউট।’ প্রায় ১৩ বছর পর সেই ভারতীয় দলের একজন, রবিন উথাপা জানালেন, মহেন্দ্র সিং ধোনির দারুণ এক বুদ্ধিতে তারা জিতেছিল সেই টাইব্রেকার। সেই বিশ্বকাপে নিয়ম ছিল, ম্যাচ টাই হলে ফাঁকা স্টাম্পে পর্যায়ক্রমে একটি করে বল করবেন দুই দলের ৫ ক্রিকেটার। যে দল বেশিবার স্টাম্পে লাগাতে পারবে, জয় তাদের। গ্রুপ পর্বে ডারবানে ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচ হয়েছিল টাই। ‘বোল-আউট’-এর রোমাঞ্চে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান। দুই দলের কৌশলের পার্থক্য ছিল লক্ষণীয়। পাকিস্তান নির্ভর করেছিল মূল বোলারদের ওপর, ভারত দায়িত্ব দিয়েছিল মূলত অনিয়মিতদের। ভারতের হয়ে প্রথম বল করেন বিরেন্দর শেবাগ, দ্বিতীয়টি হরভজন সিং। দুজনই ছোট্ট রান আপে এসে বল লাগান স্টাম্পে। পাকিস্তানের হয়ে দুই পেসার উমর গুল ও ইয়াসির আরাফাত পুরো রান আপ নিয়ে বোলিং করে স্টাম্পে লাগাতে পারেননি। ভারতের তৃতীয় বলটি করেন উথাপা, যিনি বলা যায় একদমই বল করতেন না। কিন্তু ছোট্ট করে দৌড়ে এসে উথাপাও বল লাগান স্টাম্পে। পাকিস্তানের তৃতীয় বলটি করেন শহিদ আফ্রিদি। ব্যর্থ হন তিনিও। ভারত ৩-০তে এগিয়ে যাওয়ায় আর বাকি দুজনের বোলিংয়ের প্রয়োজন হয়নি। খ্যাপাটে উল্লাসে মেতে ওঠে ভারতীয়রা। ছোট্ট রান আপে বল করার কৌশল তো কাজে দিয়েছিলই, উথাপা জানালেন আরেকটি কৌশলের কথা। আইপিএল দল রাজস্থান রয়্যালসের ডিজিটাল আয়োজনে, নিউ জিল্যান্ডের স্পিনার ইশ সোধির সঙ্গে কথোপকথনে উথাপা বললেন ধোনির সেই কৌশলের কথা। “ ধোনি একটা কৌশল খুব ভালো নিয়েছিলেন, পাকিস্তানি কিপার যা করেননি। পাকিস্তানের কিপার দাঁড়িয়েছিল কিপারদের স্বাভাবিক পজিশনে, স্টাম্পের পেছনে এক পাশে সরে। কিন্তু ধোনি দাঁড়িয়েছিল স্টাম্পের ঠিক পেছনে, একদম সোজাসুজি। আমাদেরকে বলেছিল, স্টাম্পে না তাকিয়ে ¯্রফে তার শরীর সোজা বল করতে। এতেই কাজ হয়েছিল, বল স্টাম্পে লাগার সুযোগ তাতে বেড়ে গিয়েছিল। আমরা তার কথামতোই কাজ করেছি।” দুই দলই পরে উঠেছিল সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে। আরেকটি রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার ম্যাচে শেষ ওভারে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ভারত।