ফরিদপুরে করোনা যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে আরো এক মুক্তিযোদ্ধার প্রাণ গেলো। এই নিয়ে ফরিদপুরে ছয় জনের মৃত্যু হলো করোনায়। এর মধ্যে তিন জনই মুক্তিযোদ্ধা।
রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুক্তিযোদ্ধা কমলেশ চক্রবর্তী ওরফে ভানু (৬৫)। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন। এছাড়াও তিনি ফরিদপুর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসহ অসংখ্য আতœীয় স্বজন রেখে গেছেন।
ফরিদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার নজরুল ইসলাম জামাল জানান, প্রয়াত এই মুক্তিযোদ্ধা মরদেহ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শহরের নিলটুলীস্থ তার বাড়ির সামনে আনা হয়। পরে তার মরদেহ অম্বিকাপুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে দাহ করা হয়।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সহকারি পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ২১ মে ওই মুক্তিযোদ্ধার শরোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর দুইদিন পর তাকে ফরিদপুরের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। গত শুক্রবার তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তাকে আইসিইউ ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ওই ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও জানান, ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, ভাইসহ তার পরিবারের আরও ছয় সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
রবিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমলেশের শেষকৃত্য ফরিদপুরের অম্বিকাপুর পৌর শ্মশানে সম্পন্ন হয়। তিনি কভিট-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একারনে এলাকাবাসী এ দাহ অনুষ্ঠানে বাধা দেয়। পরে পুলিশ ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজার তৎপরতায় দাহ কাজ সম্পন্ন হয়। মুখাগ্নি করে মৃতের ছেলে উজ্জল চক্রবর্তী।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল রামেদুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসী শ্মশান ঘাটে মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পথে বাশ ও কাঠ দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পরে তাদের বুঝিয়ে এবং পুলিশ বাড়িয়ে পুলিশের তত্তাবধানে এ দাহ কাজ সম্পন্ন হয়।
এই মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে তিনজন মুক্তিযোদ্ধাসহ ফরিদপুরে মোট ছয়জনের কভিট-১৯-এ মৃত্যু হলো। এর আগে ভাঙ্গায় এক মুক্তিযোদ্ধাসহ দুইজন, বোয়ালমারীতে এক মুক্তিযোদ্ধাসহ দুইজন এবং আলফাডাঙ্গায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তি মারা গেছেন।