রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলোতে এখনও বসবাস করছেন সাধারণ মানুষজন। ঝুঁকিপূর্ণ এসব এলাকায় বসবাসকারীদের বার বার বলা হলেও সরে যাচ্ছেন না তারা। ইতোমধ্যে সেই সকল এলাকা চিহ্নিত করে ঝুঁকিপূর্ণ সতর্কতামূলক সাইন বোর্ড স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন এ কে এম মামুনুর রশিদ।
এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী দিনগুলোতে রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধ্বসে আরো কোন প্রাণহানী যাতে না ঘটে তার জন্য সকলকে সম্মিলিত ভাবে কাজ করার আহবান তিনি। তিনি পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা সকল বাসিন্দাদের বৃষ্টি দেখলেই আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন।
রাঙ্গামাটি পৌরসভার এলাকার শিমুলতলী, রূপনগরসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডেও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সর্তকতা সাইনবোর্ড টাঙ্গানের সময় এলাকাবাসীকে এ আহবান জানান।
এ সময় রাঙ্গামাটি জেলা প্রসাশনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পল্বব হোম দাশ, মোঃ ইসলাম উদ্দিন, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলার রবি মোহন চাকমা, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি নন্দন দেবনাথ, রূপনগর সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মোঃ মিটুসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসন এ কে এম মামুনুর রশিদ আরো বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদেরকে সামনের দিনগুলো মোকাবেলা করতে হবে। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধ্বসে যে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে তা আমাদের জন্য বড়োই আতংকের ছিলো। ২০১৭ সালে আগাম বৃষ্টির ফলে সারা দেশের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে ১২০ জনের প্রাণ হানী ঘটে। তখন আমাদের প্রস্তুতি থাকলেও তেমন প্রস্তুতি ছিলোনা হঠাৎ এই প্রাণহানী আমাদের সকলকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে যাতে আমাদের এই ধরনের কোন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয় তার জন্য আমাদের সকলকে সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, রাঙ্গামাটি পৌরসভা, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্টসহ বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে নিয়ে সভা করা হয়েছে। প্রস্তুতি রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি টিমকে।
ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী টিম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। যে কোন দূর্যোগে যাতে আমরা দ্রুত মোকাবেলা করতে পারে, তার জন্য আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে।
এ সময় স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জেলা প্রশাসক তাদের অনুরোধ জানিয়ে আরো বলেন, দূর্যোগ কখনো কাউকে বলে কয়ে আসে না। যদি মনে করেন একটু বেশী বৃস্টি হচ্ছে সাথে সাথে আপনারা আপনাদের নির্ধারিত আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাবেন। আপনাদের খাওয়ানোর দায়িত্ব আমার। আমাদের কাউকে অভূক্ত থাকতে হবে না। একটু বৃষ্টি বেশী দেখলেই দ্রুত আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে নিজের এবং পরিবারের জীবন রক্ষা করার অনুরোধ জানান তিনি।
এর আগে তিনি রাঙ্গামাটির ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সতর্কতা মুলক সাইন বোর্ড টাঙ্গিয়ে দেন এবং পাহাড় ধসের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লিফলেট বিতরণের মধ্যদিয়ে প্রচারণা চালান জেলা প্রশাসক।