করোনার ভয়ে মানুষ যখন দিশেহারা; তখনও লম্পটদের লুলুপ দৃষ্টির তীর পড়ে শিশু ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধকাণ্ডে। কুমিল্লার হোমনা উপজেলার শ্রীমদ্দি গ্রামে বৃহস্পতিবার ঘটে ঘাওয়া এমনই জঘন্য অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিবেশী ষাট বছরের লম্পট রিকশাওয়ালা আবদুল মতিন কর্তৃক ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভিকটিমের মা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হোমনা থানায় একটি মামলা করেন। এদিন সকালে মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
মামলার বাদি ভিকটিমের মা বলেন, ‘সেদিন আমি এবং আমার স্বামী ক্ষেতে কাজ করছিলাম। আমার মেয়ে আর তিন বছরের শিশু পুত্র (৩) ঘরে ঘুমাইতেছিল। এই সুযোগে মতিন আমার মাইয়ার হাত, পাও, মুখ বাইন্দা বেধে) ইজ্জত নষ্ট করে।
চাচা নবী জানান, ‘ মামলার ব্যাপারে শনিবার সকালে আমরা কুমিল্লা (জিলা সদর) যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিছি। এই সময় আসামি মতিনের ছেলেরা আইসা আমাদেরকে মামলা তুইল্যা নেওয়ার জন্য ডর ভয় দেখাইতেছে।’
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ধর্ষক আবদুল মতিন তাদের প্রতিবেশী এবং ভিকটিমের মায়ের আপন ভাইয়ের শ্বশুর। সম্পর্কে ভিকটিমের নানা হয়। ভিকটিম উপজেলা সদরের খাদিজা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে ভিকটিম ও তার ছোট ভাই তাদের ঘরে চৌকিতে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় ধর্ষক মতিন ঘরে ঢুকে তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে দরজার খিল আটকে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ভিকটিমের গায়ের ওড়না দিয়ে তার হাত, পা ও মুখ চৌকির সঙ্গে বেধে ফেলে এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পড়নের লুঙ্গি খোলা এবং হাতে ধরা অবস্থায় ধর্ষক মতিনকে ভিকটিমের ঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে পালিয়ে যেতে দেখে ভিকটিমের চাচাতো বোন কুলসুম বিবি। কুলসুম এই সময় হোমনা সদরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘরের পাশ দিয়েই যাচ্ছিল। আবদুল মতিনের লুঙ্গির পেছনে ভেজা দাগ দেখতে পায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ঘর থেকে ভিকটিমের গোঙানির শব্দ শুনে কুলসুম বিবি ঘরে ঢুকে তার মুখ ও দুই হাত বাধা, উলঙ্গ এবং ধর্ষিতা অবস্থায় কাঠের চৌকির ওপর দেখত পেয়ে বাঁধন খুলে দেয়। এই ঘটনা জানতে পেরে মা-বাবা দ্রুত ছুটে গিয়ে তাদের মেয়ের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনেন। ভাতিজির এই ঘটনা শুনে ব্রেইন ষ্ট্রোকে আক্রান্ত ভিকটিমের চাচি ফাতেমা বেগম অজ্ঞান হয়ে যায়। তার চিকিৎসায় ছুটাছুটি করতে গিয়ে অভিযোগ দায়েরে একদিন পিছিয়ে যায়। পরে শুক্রবার ৮নং পৌর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল কাদিরের সহায়তায় হোমনা থানায় মামলা করেন ভিকটিমের পরিবার।
৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল কদির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভিকটিমের সুবিচার পাওয়ার জন্য তার পরিবারকে আইনীভাবে সহযোগিতা করেছি।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, ঘটনা শুনেই পদক্ষেপ নেই। গিয়ে জানতে পারি, আসামি নদী পার হয়ে অন্য উপজেলায় চলে গেছে, সেখানেও আমরা অভিযান চালাই। ভিকটিমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মতিনের ছেলেরা ভয়ভীতি দেখালে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।