আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সরাইলের ৩ গ্রাম। আহত হয়েছে ৬ শিশুসহ অন্তত ১৫ জন। ওপড়ে নিয়েছে নলকূপ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১টি মসজিদ। খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে অনেক পরিবার। ঘূর্ণি ঝড়ের কবলে পড়া পরিবার গুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা পরিষদ। শনিবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আইরল (শান্তিনগর), কুচনি ও বুড্ডা গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে এ ঘূর্ণিঝড়। উপজেলা প্রশাসন, ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ৩-৫ দিন ধরে সরাইলে দিনে ও রাতে থেমে থেমে কখনো ঝিরিঝিরি আবার মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল ভোর থেকেই বিকট শব্দে আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সকাল ৬টার দিকে হঠাৎ চারিদিকে অন্ধকার নেমে আসে। এ অন্ধকার স্থায়ী হয় অনেকটা সময়। সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে শু শু শব্দে আইরল গ্রাম থেকে শুরূ হয় ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব। তবে সেটি আঘাত হানে শুধু একটি ইউনিয়ন নোয়াগাঁও-এর তিনটি গ্রামে। ১০-১৫ মিনিটের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় কুচনি, বুড্ডা ও শান্তিনগর গ্রামের ২০-৩০টি বসত ঘর। অনেকের ঘর ও দোকানের চাল উড়িয়ে দূরদূরান্তে ফেলে দিয়েছে। ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি বাড়ির প্রতিরক্ষা দেওয়াল। মুচড়ে ওপড়িয়ে নিয়েছে নলকূপ। বেশ কয়েকটি পরিবার এখন খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। ভয়াবহ এ তান্ডবে তিন গ্রামে আহত হয়েছে ১৫ জন। এরমধ্যে ৬ জনই শিশু। আহতরা হলো- বাছির মিয়া (৩০), রাজিয়া বেগম (৩৪), তাবাসসুম (০৩), সাদিয়া (১০), মাহাবুব (১২), শিহাবুর রহমান (১০), মোজাহিদ (০৮) ও শায়লা (০৯)। আহতদের মধ্যে রাজিয়া বেগম সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর শান্তিনগরে ৫টি, বুড্ডা গ্রামে ১১টি ও কুচনি গ্রামে ১৪টি সহ মোট ৩০ পরিবারের বসত ঘর ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। অনেকের চালা বেড়া উড়িয়ে নিয়েছে। কুচনি গ্রামের ‘মসজিদুল আশরাফি’ নামের একটি টিনের চালার তৈরী মসজিদ ভেঙ্গে গেছে। তান্ডবের পর দ্রƒত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মোসা। তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত ৩০ পরিবারের প্রত্যেক পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইউএনও। ইউএনও বলেন, পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রত্যেক পরিবারকে ২ বান্ডিল টিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর পরিষদের ফান্ড থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো, সাইফুল ইসলাম বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্যে মাঠে আমাদের লোকজন কাজ করছেন।