নাটোরের বড়াইগ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করায় পিতাকে রাতের আঁধারে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে ঔরসজাত সন্তান। এ ঘটনায় আহতের ছেলেসহ তার তিন বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তিনটি বড় হাসুয়া জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় বড়াইগ্রাম আমলী আদালতের বিচারক সুলতান মাহমুদের কাছে আসামীদের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ঘটনায় আটকরা হলো-উপজেলার কুজাইল গ্রামের আহত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে শাহীন আলম (১৬), তার বন্ধু একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আমীর হোসেন তুহিন (১৯) ও মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে রাব্বী (১৭) এবং মেরিগাছা গ্রামের হাশেম সরদারের ছেলে নাইম সরদার (২০)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বড়াইগ্রাম থানার উপপরিদর্শক সানোয়ার হোসেন জানান, প্রায় আট মাস আগে আবদুর রাজ্জাক দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে নিয়মিত ভরণপোষন না দেয়া এবং সৎ মায়ের সন্তান হলে সম্পত্তির অংশীদার হবে এই ভেবে প্রথম স্ত্রীর সন্তান শাহীন আলম তার উপর ক্ষিপ্ত হয়। এ ক্ষোভে সে বন্ধুদের নিয়ে তার বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা সফল হলে তার বাবার সম্পদ থেকে বন্ধুদের নগদ ৫ লাখ টাকা দেয়ার চুক্তি করে শাহীন। পরে গত ১২ মে রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে আবদুর রাজ্জাক পাশের বাজারে যাবার পথে শাহীনের নেতৃত্বে তারা চারজন আবদুর রাজ্জাককে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করতে জবাই করত উদ্যত হলে পথচারীর লাইটের আলো দেখতে পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আবদুর রাজ্জাককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় সেদিন রাতেই অজ্ঞাত আসামীদের নামে থানায় মামলা দায়ের হলে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত নামে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের দিক নির্দেশনায় ওসি দিলীপ কুমার দাসের তত্ত্বাবধনে তদন্ত শেষে পুলিশ শাহীন আলমকে আটক করলে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামীদের আটক করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মরা বড়াল নদীতে ফেলে রাখা অবস্থায় হামলায় ব্যবহৃত হাসুয়া তিনটি জব্দ করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস জানান, রাতের আঁধারে আবদুর রাজ্জাকের উপর হামলাকারীদের ব্যাপারে কোন তথ্য ছিলো না। তবে চৌকস পুলিশ সদস্যদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রকৃত আসামিরা আটক হয়েছে। তাদের ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।