ঢাকাই সিনেমার দূর্দিন যাচ্ছে বেশ কয়েক বছর ধরে। ব্যবসা সফল সিনেমার অভাবে দেশের অনেক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি রাজধানীর অভিসার সিনেমা হল ভেঙে সেখানে কমিউনিটি সেন্টার গড়ার ঘোষণা দিয়েছে হল কতৃপক্ষ। সেই সুর ধরেই রাজধানীর মতিঝিল এলাকার মধুমিতা সিনেমা হল বন্ধের কথাও শোনা যাচ্ছে। কয়েকটি গণমাধ্যমেও অভিসারের পাশাপাশি মধুমিতা বন্ধের খবর প্রকাশ হয়। মধুমিতা সিনেমা হলও কী সত্যিই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয় এই হলের মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের কাছে। করোনাকালের এই সময়ে হতাশার কথায় শুনিয়েছেন তিনি। ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘সিনেমা হল ভেঙে ফেলার এখনো কোনো পরিকল্পনা হয়নি, কিন্তু ছবি না থাকলে হল চলবে কি করে! পুরনো ছবি দিয়ে তো হল চলে না! আমাদের ছবির মান খুব খারাপ হয়ে গেছে। করোনা আসার আগে থেকেই ছবির অবস্থা খুব খারাপ। এরমধ্যে ‘পাসওয়ার্ড’, ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’, ‘শাহেন শাহ’ এ সিনেমাগুলো কিছুটা চলেছে। ভালো ছবিই তো আসছে না। করোনাভাইরাস আমাদের আরও বিপদ বাড়িয়েছে। অনেক হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ৩০০ থেকে সিনেমা হল দাঁড়িয়েছে ১১৫তে।’ মধুমিতা সিনেমা হলের মালিক নওশাদ আরও বলেন, ‘সিনেমা হলের কর্মচারিদের বসিয়ে রেখে বেতন দিতে হচ্ছে। হল থেকে ব্যবসা নাই, ঘর থেকে টাকা এনে দিতে হচ্ছে। সরকার এই সময় যদি আমাদের পাশে দাঁড়ান, তাহলেই আমরা এই সমস্যার মোকাবেলা করতে পারবো। আমরা এমন একটা অবস্থায় আছি, সিনেমা হল ভাঙতেও পারছি না, চালাতেও পারছি না। করোনা দূর হয়ে আবারও সুদিন আসুক সেই প্রার্থনা করি এখন।’ মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে ৩০০ গজ দক্ষিণে হাতের বাঁয়ে মধুমিতা সিনেমা হল। ঢাকার অন্যতম পুরানো সিনেমা হল এটি। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন এই সিনেমা হলের প্রতিষ্ঠাতা। ১লা ডিসেম্বর ১৯৬৭ সালে যাত্রা শুরু হয় মধুমিতা সিনেমা হলের। ১২২১ জন দর্শক একসঙ্গে বসে ছবি দেখতে পারেন এ সিনেমা হলে। এখন কেবর টিম টিম আলোর মতো বেঁচে আছে হলটি। হল মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বললেন, ‘ভালো ব্যবসা সফল সিনেমার সংখ্যা বাড়লেই হল বাঁচবে, নয় তো সব হলই হারিয়ে যাবে একদিন!’