শাকিব খানের হাত ধরে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন শবনম বুবলী। এরইমধ্যে তাঁরা জুটি বেঁধেছেন ১০টি চলচ্চিত্রে। গণমাধ্যমে বুবলীকে বলা হতো শাকিব খানের নায়িকা। মিডিয়াপাড়ায় গুঞ্জন চলছে, তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এমনকি শাকিব খান প্রযোজিত নতুন ছবিগুলো থেকেও বাদ পড়ছেন তিনি। শাকিব খানকে নিয়ে নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন পরিচালক মালেক আফসারি। এই ছবিতে নায়িকা হিসেবে থাকছেন না বুবলী। শাকিব খান চাইছেন নতুন নায়িকা। এমনটিই জানিয়েছেন ছবির পরিচালক মালেক আফসারি ও সহপ্রযোজক মোহাম্মদ ইকবাল। ইকবাল বলেন, ‘বুবলীকে নিয়ে আমরা বেশ কিছু চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি। এখন চাইছি নতুন কোনো নায়িকা নিয়ে কাজ করতে। শাকিব খানও চান নতুন কেউ আসুক। বর্তমানে আমাদের নায়িকা-সংকট রয়েছে। আশা করি, এই ছবির মধ্য দিয়ে একজন শিল্পী হলেও ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্ত হবেন।’ এ প্রসঙ্গে পরিচালক মালেক আফসারি বলেন, ‘সব ছবিতেই নায়িকা বুবলী অভিনয় করবেন, বিষয়টি এমন নয়। আমি এখন যে গল্প তৈরি করছি, সেটি অ্যাকশনধর্মী। এই ছবির জন্য আমি এমন নায়িকা চাই, যিনি চরিত্রটি পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। তবে কে হবেন নায়িকা, সেটি নিয়ে আমি ভাবছি না। বিষয়টি শাকিব খান নিজেই দেখছেন। তবে বুবলী থাকছেন না, এটা বলতে পারি।’ মালেক আফসারি আরো বলেন, ‘শাকিব খান এখন যে উচ্চতায় আছেন, তাতে করে তাঁর সঙ্গে কোন নায়িকা অভিনয় করলেন, সেটা বিষয় নয়। যিনি তাঁর সঙ্গে নায়িকা হিসেবে আসবেন, তিনি নিজে পায়ের নিচে মাটি পেয়ে গেলেন। সবাই তাঁকে বলবে শাকিব খানের নায়িকা। চলচ্চিত্রে অবস্থান তৈরির জন্য এটাই যথেষ্ট। আগামী মাসের শেষের দিকে আমরা নতুন চলচ্চিত্রটি শুরু করব। নাম এখনো ঠিক করা হয়নি। ২০১৯ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পায় মালেক আফসারি পরিচালিত, শাকিব খানের চলচ্চিত্র ‘পাসওয়ার্ড’। ছবিটি তখন ব্যবসাসফল হয়। কিছুটা বিরতির পর আবার শাকিব খানকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন আফসারি। ছবিটি প্রযোজনা করছে শাকিব খানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এস কে ফিল্মস। অপরাধজগতের এক ডনের সুইস ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড নিয়ে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবির গল্প। ঘটনাক্রমে পাসওয়ার্ডটি হারিয়ে যায়। সেই হারিয়ে যাওয়া পাসওয়ার্ড খুঁজতে থাকে ডন। আবদুল্লাহ জহির বাবুর চিত্রনাট্যের এ ছবিতে অভিনয় করেন শাকিব খান, বুবলী, মিশা সওদাগর, অমিত হাসান প্রমুখ। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেন শাকিব খান ও তাঁর বন্ধু মোহাম্মদ ইকবাল। বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ পাঠিকা থেকে ২০১৬ সালে চলচ্চিত্র শুরু করেন শবনম বুবলী। শাকিব খানের নায়িকা হয়ে ‘বসগিরি’, ‘শ্যুটার’, ‘রংবাজ’, ‘অহংকার’, ‘চিটাগাইঙ্গা পোয়া নোয়াখাইল্যা মাইয়্যা’, ‘সুপার হিরো’, ‘ক্যাপ্টেন খান’, ‘পাসওয়ার্ড’, ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’, ‘বীর’ এই ১০টি চলচ্চিত্রে কাজ করেন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে শাহীন সুমন পরিচালিত ‘বিদ্রোহী’।
নাটকের গল্পে আসছে পরিবর্তন
এফএনএস বিনোদন: লকডাউনের কারণে দুই মাসের বেশি সময় টিভি নাটকের শুটিং বন্ধ ছিল। এরমধ্যে অনেকে বিকল্প মাধ্যম হিসেবে বাসায় শুটিং করেছেন মোবাইল ক্যামেরায়। অবশেষে গেল ১লা জুন থেকে আবারো শুটিং শুরু হয়েছে। টিভি নাটকের আন্তঃসংগঠনগুলোর নিয়ম মেনেই এখন শুটিং হচ্ছে। অনেক পরিচালক, অভিনেতা ও অভিনেত্রী শুটিং শুরু করেছেন। তবে দূরত্ব বজায় রেখে এবং সংগঠনের নিয়ম-নীতি মেনে এই সময়ে ভালো নাটক উপহার দেয়া কতটুকু সম্ভব প্রশ্ন থেকে যায়। জানা যায়, করোনার এই ক্রান্তিলগ্নে সব কিছুর মতো নাটকের গল্পেও আসছে পরিবর্তন। এই সময়ে ইনডোর ভিত্তিক নাটকের দিকেই নির্মাতারা জোর দিচ্ছেন। কিন্তু ডাল-পালা বিহীন শুধু ইনডোর বেইজড নাটকগুলো দর্শক কীভাবে নেবেন সেটিও নির্মাতাদের ভাবাচ্ছে। এদিকে স্বল্প সংখ্যক শিল্পী নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে। গেল কয়েক বছর আমাদের নাটক এমনিতেই নায়ক-নায়িকা নির্ভর হয়ে গেছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন। তারমধ্যে ইনডোর বেইজড গল্পের নাটকের মান কতটা ধরে রাখা যাবে তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যায়। বিষয়টি নিয়ে নির্মাতা সাগর জাহান বলেন, আমাদের এই পেশায় দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা অসম্ভব। কিন্তু পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে নেই। তাই বাধ্য হয়ে এভাবেই কাজ করতে হবে। এই সময়ে আউটডোর কাজ করা সম্ভব হবে না। ফলে যারা কাজ করছেন তাদের ইনডোর ভিত্তিক গল্পের দিকেই গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। কিন্তু এই ধরনের নাটক দর্শক নেবে কিনা সেটাই সন্দেহ! কারণ দর্শক নাটক দেখার সময় বিনোদন খুঁজবে। এটি করোনার সময়ে নির্মাণ হয়েছে সেই বিষয় তারা ভাববেন না। এ ছাড়া গল্পে বৈচিত্র্যতা না থাকলেও সেটির প্রতি দর্শকের আগ্রহ থাকে না। আমি যদি ইনডোর ভিত্তিক মনের মতো কোনো গল্প পাই তাহলে কাজ করবো। না হয় এখন শুটিং করার ইচ্ছে নেই। নির্মাতা মহিদুল মহিম বলেন, আমি এখনো শুটিং করার পরিকল্পনা করিনি। আমি যে ধরনের নাটক করি তার জন্য আমাকে আউটডোরে যেতে হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সে ধরনের কাজ করা সহজ হবে না। এই সময়ে কাজ করতে হলে ইনডোর বেইজড গল্পের বিকল্প নেই। কিন্তু কাজ করতে গেলে এভাবে ভালো কাজ কখনো সম্ভব নয়। আমি মনে করি এখন যারা কাজ করছেন তারা কাজের জন্য কাজ করছেন। জীবিকার প্রয়োজনেই এই কাজ করতে হচ্ছে। শুধু ঘর-জানালা বারান্দা ভিত্তিক গল্প নিয়ে কয়টা নাটক নির্মাণ করা যাবে? একজন লেখক যদি লেখার স্বাধীনতা না পান তাহলে সেখানে ভালো গল্প ফুটে উঠবে না। জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাদিয়া আহমেদও নাটকের গল্পের পরিবর্তন নিয়ে কথা বলেন। তার ভাষ্য, আগের মতো এখন তো আর শুটিং সম্ভব হবে না। তার জন্য গল্পে পরিবর্তন আনতে হবে। এই পরিবর্তন একক ও ধারাবাহিক দুটোর ক্ষেত্রেই। গেল ৩রা জুন থেকে শুটিং শুরু হয়েছে দীপ্ত টিভির ‘মান-অভিমান’ মেগা সিরিয়ালের। এই ধারাবাহিকের অভিনেত্রী সানজিদা বলেন, গল্পের পরিবর্তন করেই আমাদের এই সিরিয়ালের শুটিং করতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে হলে এখন আর আগের মতো কাজ করা যাবে না। পরিচালক তাই অনেকের চরিত্রে পরিবর্তন করেছেন। অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন, এখন নাটকের গল্পে পরিবর্তন ছাড়া উপায় নেই। আউটডোরে শুটিং সম্ভব না। সেক্ষেত্রে নতুন কিছু ভাবতে হবে। ইনডোর ভিত্তিক নাটক করতে হলে সেখানে গল্প ফুটাতে হবে অন্যরকম চমক দিয়ে। এমনিতেই অনেকের অভিযোগ আমাদের নাটকের গল্প গতানুগতিক। সেক্ষেত্রে ইনডোর বেইজের নাটকের দিকে অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে নির্মাতাদের। বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান প্রধান তারেক আখন্দ বলেন, আমরা এখন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। শুটিং তো মাত্র কয়েকদিন হলো শুরু হয়েছে। তবে এটা বলতে পারি নাটকের মানের ক্ষেত্রে আমরা কোনো ছাড় দেবো না। গল্প যদি হয় দুজন ভার্সিটি পড়ুয়া তরুণ-তরুণীর। আর সেটাকে যদি ঘরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয় সেই গল্পের নাটক নিয়ে আমাদের আগ্রহ থাকবে না। ইনডোর ভিত্তিক নাটক হলে সেটির গল্পও মানসম্পন্ন হতে হবে বলে আমি মনে করি।