সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বেচাতে অনীহা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের। উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদামে গত ১৯ মে থেকে ধান কেনা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ২ জন কৃষক ২ মোট্রক টন ধান সরকারি গুদামে বিক্রি করেছেন। ফলে ধান কেনার কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও চলতি মৌসুমে উপজেলার ২৫৪৪ জন চাষির কাছ থেকে ২৫৪৪ মেট্রিক টন ধান কেনার কথা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতি মণ চিকন ধান প্রকার ভেদে ১০৫০ থেকে ১২০০ টাকা এবং মোটা ধান প্রকার ভেদে ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি ভাবে চলতি বোরো মৌসুমে প্রতি মণ ধানের দাম ঠিক করা হয়েছে ১০৪০ টাকা।
খোলা বাজারে চিকন ধানের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা তা সরকারি গুদামে বেচতে অনীহা দেখাচ্ছেন। পাশাপাশি মোটা ধানের দাম খোলা বাজারে কম হওয়ায় তা সরকারি গুদামে বেচতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এদিকে উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদামের পক্ষ থেকে কৃষকদের চিকন ধান সরবরাহের জন্য বলা হচ্ছে। মোটা ধান নিয়ে আসলে তা কেনা হচ্ছে না। যে কারণে ধান কেনায় কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাপ্ত সূত্রে আরো জানা গেছে, মোটা ধান কেনায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মনগড়া নিয়ম আরোপ করার কারণে ধান বেচায় আগ্রহ হারাচ্ছেন উপজেলার কৃষকেরা। নীতিমালা উপেক্ষা করে মোটা ধান কেনাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় অনেক কৃষক ধান দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন।
কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দামের ব্যাপার ছাড়াও সেখানে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে ধান বেচায় নানা বিড়ম্ববনার স্বীকার হতে হয়। ধানের মূল্যও ৭ থেকে ১০ দিন পর ব্যাংক থেকে তুলতে হয়। যে কারণে খোলা বাজারে ধান বেচতে কৃষকের আগ্রহ বেশি।
উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মুনতাজ আলী শেখ জানান, গত আমন মৌসুমে আমি সরকারি গুদামে এক মেট্রিক টন ধান বেচেছিলাম। চলতি বোরো মৌসুমেও সরকারি গুদামে আমার ধান সরবরাহের কথা থাকলেও তা না করে খোলা বাজারে সব ধান বেচে দিয়েছি। কারণ মোটা ধান সরকারি গুদামে কিনছে না আর চিকন ধানের দাম বাজারে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া দেরিতে দাম পরিশোধসহ বিভিন্ন বিড়ম্ববনা পোহাতে হয়।
উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ২৫৪৪ জন চাষির মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২ জন কৃষক ২ মেট্রিক টন ধান সরকারি ভাবে বেচেছে। কৃষক ধান নিয়ে আসলে আমরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ধান কিনব।
তিনি আরো জানান, মোটা ধান কেনায় সরকারি কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও তা কেনা হচ্ছে না।