ভেঙে পড়ে আছে ব্রিজ-কালভার্ট। মেরামত হয়নি অনেক কাঁচা-পাকা রাস্তা। বন্যার পানির তোরে ভেঙে যাওয়া স্থান গুলোতে নির্মিত কাঠ ও বাঁশের সাঁকো গুলোও এখন নড়বড়ে। অতিরিক্ত চলাচলে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনই ভাবে গাইবান্ধার সাঘাটায় গত বছরের বন্যার ক্ষত আজও শুকায়নি। চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দুই উপজেলার মানুষ।
জেলার সাঘাটা উপজেলার ৪টি ও ফুলছড়ি উপজেলার একটি ব্রিজ বন্যায় ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা এক বছরেও সংস্কার করা হয়নি। ভেঙে যাওয়া সড়কগুলো ঠিক না করায় চলতি মাসে টানা বৃৃষ্টিতে বেড়ে গেছে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ। ভাঙা সেতুগুলোর স্থানে বাঁশ ও কাঠের সাঁকো তৈরি করে কোনোমতে যাতায়াত চলছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের ফলে সাঁকোগুলোও নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূণ হয়ে পড়েছে।
গত বছরের জুলাই মাসের প্রথম দিকে ভয়াবহ বন্যার পানির প্রবল তোরে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া-গোবিন্দগঞ্জ সড়কটির ওপর নির্মিত তিনটি ও বোনারপাড়া-ভুতমারা সড়কের রেল গেইট এলাকায় একটি সেতু ভেঙে ভেসে যায়। সাঘাটা-গাইবান্ধা আন্চলিক মহাসড়কের ভরতখালী পোড়াবাড়ী নামক স্থানে প্রায় ২০০ ফুট, বোনারপাড়া-মহিমাগঞ্জ সড়কের ২টি স্থানে, বোনারপাড়া-ভরতখালী সড়কের একটি স্থানে ও হলদিয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে সড়ক ভেঙে যায়। ভেঙে যাওয়া চারটি ব্রিজের স্থানেই কাঠ ও বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করে গ্রামবাসী। হেঁটে ছাড়া কোনো যানবাহন চলে না সাঁকোর উপর দিয়ে। দুটি স্থানে সরকারী ভাবে মাটি ভরাট করে সচল করা হলেও আজও ক্ষত হয়ে আছে বাকি স্থান গুলোতে।
রামনগর এলাকার পাশ্ববর্তি রাখালবুরুজ ইউনিয়নের সবজি বিক্রেতা মশিউর রহমান জানান, জীবিকার তাগিদে মালামাল আনতে বোনারপাড়ায় যেতে হয়। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার পথ ঘুরে মালামাল গ্রামে আনতে হয়। এতে খরচ বেড়ে যায়। চরম দুর্ভোগে প্রায় এক বছরেও মিলছে না প্রতিকার। বোনারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়ারেছ প্রধান জানান, বন্যায় ক্ষতিগগ্রস্থ কাঁচা রাস্তা গুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে কাবিটা-কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে সংস্কার করা হয়েছে। ব্রিজগুলো সংস্কারের জন্য এলজিইউডি বিভাগ এগিয়ে আসলেই এই ইউনিয়নের মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। অপরদিকে বন্যার পানির চাপে ফুলছড়ি উপজেলার কেতকিরহাট বাজারে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে গাইবান্ধা-কঞ্চিপাড়া-কেতকিরহাট পাকা সড়কের কেতকিরহাট বাজারে প্রাায় ৫০ ফুট অংশ ভেঙে যায়। পরে ওই সড়কে প্রায় ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করে স্থানীয়রা। ওই এলাকার কলেজছাত্র সেলিম মিয়া বলেন, সাঁকোটি মেরামত করা না গেলে চরম বিপাকে পড়তে হবে সামনের দিনে। শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও অসুস্থ রোগীদের ভোগান্তির শেষ থাকবে না। ফুলছড়ি উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, সাঁকোর স্থলে সেতু নির্মাণে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে কথা হলে গাইবান্ধা এলজিইডির সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলাম জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্রিজ কালভার্টের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।