নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে গত এক সপ্তাহে লাম্পি ভাইরাসের সংক্রমণে সহস্রাধিক গরু আক্রান্ত হয়েছে। সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শের অভাবে খামারি ও গরুর মালিকেরা বিপাকে পড়েছে। এসব অসুস্থ গরু হাট-বাজারে দেদারছে জবাই করার অভিযোগ উঠেছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩টি বলদ ও ২টি বাছুর গরু মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়ভিটা এলাকায় প্রথমে লাম্পি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রায় সহস্র্রাধিক গরু সংক্রমিত হয়। লাম্পি ভাইরাস বাতাসে ও মশা-মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গরুর পা ফুলা, গলা ব্যাথাসহ জ্বর, গায়ে গুটি হয়ে চামড়ায় ঘাঁয়ের সৃষ্টি হয়। প্রতিকারের সুনির্দিষ্ট কোন ভ্যাকসিন বা ওষুধ আবিষ্কার হয় নাই। লক্ষণ ভেদে কিছু চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে ঘরোয়া চিকিৎসায় মোটামোটি ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। ৫০ গ্রাম করে খাওয়ার সোডা ও দানা গুড়, ২৫ গ্রাম করে নিমপাতা, কাঁচা হলুদ, লবন ও দুইটা প্যারাসিটামল ট্যাবলেট একসঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুইবার ৫/৭ দিন খাওয়ালে গরু সুস্থ হবে। কিন্তু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে গ্রাম্য গরুর ডাক্তার দ্বারা এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ওষুধ প্রয়োগে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অপচিকিৎসায় ওষুধের বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় অনেক সময় ভিন্ন উপসর্গে গরুর মৃত্যু হয়। এদিকে নিতাই এলাকায় দুটি বাছুর গরু ও সিট রাজিব, কেশবা, বদি গ্রামে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বলদ গরু মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ বাজারে ভাইরাস আক্রান্ত অসুস্থ গরু দেদারছে কসাইরা জবাই করছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজার রহমান লাম্পি ভাইরাস ব্যাপকহারে সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর মৃত্যুর হার একেবারেই কম। বিক্ষিপ্তভাবে দু’একটা আক্রান্ত গরু মৃত্যুর খবর এসেছে। এজন্য গরুর মালিকদের আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে। আমরা অফিসিয়ালি যে ঘরোয়া চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছি, এটা করলেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে, ৫/৭দিনের মধ্যেই গরু সুস্থ হবে। অসুস্থ গরু জবাইয়ে তিনি জানান, এখানে নির্দিষ্ট কোন কসাইখানা নেই। বাজারে গরু জবাইয়ে কসাইরা ফিটনেস সার্টিফিকেট নেয় না। অসুস্থ গরু জবাই করার অভিযোগ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত করব।