কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার প্রায় ৭৪ হাজার একর জমিতে সোলার পাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন ফসলের চাষ করতে পেরে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এই উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহ ইউনিয়নের দশকাহুনিয়া এলাকায় পুরাতন ভ্রহ্মপুত্র নদীর পার ঘেষে এখানকার গ্রামগুলোতে ৪টি সোলার পাম্পের সেচের আওতায় আনা হয়েছে। জানাযায়, কৃষি বাংলাদেশের অন্যতম চালিকা শক্তি। কৃষি ও কৃষকের জীবিকার পাশাপাশি দেশের সার্বিক উন্নয়নে উৎপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। কৃষকদের সুফলতার কথা চিন্তা করে সল্পমূল্যে বারিড পাম্প (ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালার) মাধ্যমে কোন রকম পানির অপচয় না করে কৃষি জমি চাষাবাদের জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ময়মনসিংহ-ঢাকা বিভাগের টাংগাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলায় ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলের ৪টি সোলার পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সোলার স্থাপনের ফলে অনাবাদি জমি এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। কৃষকরাও ফসলের জমিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেস। গতকাল কয়েজন কৃষকের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, আগে মেশিন দিয়ে পানি দেয়ার খরচ বেশি হতো। এখন খরচ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। আগে এ অঞ্চলে পানি দেওয়ার তেমন সুব্যবস্থা ছিল না। তাই বোরো সহ অনেক ফসলই আবাদ হতো না। বর্তমানে বিএডিসির সোলার পাম্প এ তাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, শস্য উৎপাদনে সেচের জন্য ডিজেল বা বৃষ্টির পানির উপর নির্ভর করতে হয় না। সেলুর পরিবর্তে সোলার পাম্পে সুবিধা পেয়ে আগাম ফসল করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। এসব দুর্গম গ্রামগুলোতে সোলার পাম্প বসানোর ফলে কৃষক আগের চেয়ে অনেক উপকৃত হচ্ছেন। আর সল্প খরচে তাদের জমিতে সেচ দেওয়া যাচ্ছে। তাদের আশা সেচ দিয়ে ইরি-বোরো ফসল ঘরে তুলতে পারবে। কুলিয়ারচর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রাকিবুল আলম জানান, এখনকার কৃষকরা আগে পানির অভাবে ফসল ফলাতে গিয়ে হিমসিম খেতো। এখন ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের আওতায় সোলার পাম্পের মাধ্যমে সল্প খরচে কৃষকরা ফলস ফলাতে পারছেন। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী বদরুল আলম বলেন, এই উপজেলার দশকাহনিয়া এলাকাটির কৃষক খুবই অবহেলিত। এখানে বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থা ছিল না। কৃষকরা ডিজেলের সাহায্যে সেচ কাজ করতে গিয়ে ব্যপক সমস্যার সম্মুখিন হতেন। এখন, সোলার পাম্পের সেচ করতে পেরে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় কুলিয়ারচর উপজেলায় ৪টি সোলার পাম্পে ১টি প্রক্রিয়াধীন সহ জেলায় মোট ১০টি সোলার পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। কুলিয়ারচর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সোলার পাম্প দিয়ে সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। তারা অল্প খরচে জমিতে সেচ দিতে পারছেন। এতে যেমন আবাদ বেশী করতে পারছেন, তেমনি ফসলও বৃদ্ধি করতে পারছেন কৃষকরা।