পাবনার চাটমোহরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ও অফিসের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষকের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে দু’জনের মধ্যে অশ্লীল বাক্য বিনিময়ও হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটার পর চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উতপ্তকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
জানা গেছে,গত কয়েকদিন আগে মার্চ মাসের একটি ট্রেনিংয়ের বিল ভাউচার তৈরির জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুয়াইবুর রহমান অফিসের প্রধান সহকারী নুরুল ইসলামকে নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রধান সহকারী কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও বিল না করায় এর কারণ জানতে চান। এ সময় প্রধান সহকারী ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রেগে যান। এরপর দু’জনের মধ্যে অশ্লীল বাক্য বিনিময় শুরু হয়। প্রধান সহকারী এক পর্যায়ে স্বাস্থ্য প্রশাসকের উপর চড়াও হন। পরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রেগে গিয়ে প্রধান সহকারীর টেবিলের ওপর রাখা কয়েকটির ভাউচার ছিঁড়ে ফেলে নিজ কক্ষে চলে যান।
এরপরেই প্রধান সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারতে উদ্যত হন এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষের দিকে যেতে থাকেন বলে অভিযোগ। এ সময় হাসপাতালের অন্য স্টাফরা এসে তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্তকর হলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাননান্ মাহমুদ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও প্রধান সহকারী নিজেদের নির্দোষ দাবি করে একে অপরকে দোষারোপ করেছেন।
এদিকে ঘটনা শোনার পর চাটমোহরে চাঞ্চল্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল। তাৎক্ষণিক তিনি হাসপাতালের সকল চিকিৎসক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে বসে ঘটনার বিররণ শোনেন এবং পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্ত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চলে যান।
প্রধান সহকারী নুরুল ইসলাম বলেন,মার্চ মাসে কোনো ট্রেনিং হয়নি। অথচ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাকে ওই বিল ভাউচার তৈরি করার কথা বলেন। বিল ভাউচার না করায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং টেবিলে থাকা বেশ কিছু কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেন। এছাড়া তাকে মারতে উদ্যত হন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুয়াইবুর রহমান বলেন,অশ্লীল ভাষা ব্যবহার বা মারতে উদ্যত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। বরং তিনি আমার অফিস কক্ষে এসে আমাকে মারতে উদ্যত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের প্রতিটি স্টাফদের অভিযোগ রয়েছে। মুলত অভিযোগের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতেই উনি (প্রধান সহকারী) ক্ষিপ্ত হয়ে এই কান্ড ঘটিয়েছেন।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবাল বলেন,করোনা ভাইরাস নিয়ে এমনিতেই খুব ব্যস্ত আছি। এই খবর শোনার পর আমি গিয়ে বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে দোষী যে-ই হোক তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাসপাতালের অন্যান্য স্টাফ জানান,অফিসের প্রধান সহকারী নুরুল ইসলামের তারণে তারা অতিষ্ঠ। সে কারো কথার তোয়াক্কা করেন না। ২/৩ মাসের কোন বিল করেন না। কর্মচারীদের বিল করতে টাকা আদায় করেন। কাউকে তোয়াক্কা করেন না। হাসপাতালের সবাই তার কাছে অনেকটাই জিম্মি।