রংপুরের তারাগঞ্জে দুই বছরের প্রেমকে বিয়েতে রূপ দিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে বসেছে এক কিশোরী। উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের কাংলাচড়ার বানিয়াপাড়া গ্রামের নিরাশা রায়ের কলেজ পড়–য়া ছেলে মোহন চন্দ্র রায়ের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়–য়া এক কিশোরী।
ওই কিশোরীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সে একই উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের মেনানগর বানিয়াপাড়া গ্রামের দীনবন্ধু রায়ের মেয়ে সুবর্না রানী রায়। সে চান্দেরপুকুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।
ওই শিক্ষার্থী জানায়, দুই বছর আগে কাংলাচড়ার ডাংগাপাড়া গ্রামে বড় বোনের বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে বেড়াতে গিয়ে পরিচয় হয় কাংলাচড়ার বানিয়াপাড়া গ্রামের নিরাশা রায়ের ছেলে মোহন চন্দ্র রায়ের। মোহন তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। পরিচয় হওয়ার পর তাদের মধ্যে ফোন নম্বর দেয়া-নেয়া হয়। এরপর প্রায়ই ফোনে কথা হতো তাদের । এভাবে এক পর্যায়ে মোহনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুবর্নার। গত দুই বছরে তারা একাধিকবার অভিভাবকদের লুকিয়ে ভিন্ন জগৎ সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও বেড়ায়। প্রেমের সম্পর্কের টানে সুবর্নাকে একাধিকবার শারিরীক সম্পর্ক করার জন্য চাপ দেয় মোহন। কিন্তু সুবর্না তা বারবার প্রত্যাখ্যান করে আসে। এক পর্যায়ে সুবর্নার সাথে প্রেমের সম্পর্কের কথা জানতে পারে মোহনের পরিবার। তাই তারা অন্যত্র মোহনের বিয়ের ব্যবস্থা করেন। সে অনুযায়ী গতকাল বুধবার কনে পক্ষ আসে মোহনকে আশীর্বাদ করতে (আংটি পড়াতে)। এ অবস্থায় মোহন সুবর্নাকে বলে সে সুবর্নাকে বিয়ে করতে পারবে না। পরিবারের পছন্দমতো বিয়ে করবে সে। আর তাই সুবর্নাকে ভূলে যেতে বলে তাদের প্রেমের সম্পর্কের কথা। আর তাই বুধবারই মোহনের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবীতে অনশনে বসে সুবর্না। সুবর্না মোহনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য চাপ দিলে মোহনকে তাৎক্ষনিকভাবে সড়িয়ে গোপন স্থানে পাঠিয়ে দেয় তার পরিবার।
মোহনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসায় তার উপর কেউ নির্যাতন করছে কি না জানতে চাইলে সুবর্না জানায়, শারিরীকভাবে নির্যাতন না করলেও মানসিক ভাবে নির্যাতন করছে অনেকেই। অনেকে এসে বলছে আমি যদি এখান থেকে চলে না যাই তাহলে নাকি তারা আমার খুব খারাপ অবস্থা করবে। এমনকি মোহনের দাদাবাবু (দিদির স্বামী) আমাকে হুমকি দিয়েছে যে আমাকেই যেই এসে এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করুক আমি যদি তাদের শেখানো কথা না বলি তাহলে আমার নাকি খুব খারাপ কিছু হবে, যা আমি কল্পনাও করতে পারবো না।
মোহনের বড় দিদি লিপি রায় বলেন, হামরা তো এগুলা কিছুই জানছিনো না। আর জানলেও এই মেয়ের সাথে হামার ভাইয়ের বিয়ে দিনো না হয়।
এ বিষয়ে মোহনের বাবা নিরাশা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে সয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আজম কিরণ বলেন, সন্ধ্যার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। আলোচনায় না বসা পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
তারাগঞ্জ থানার ওসি জিন্নাত আলী বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।