কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষনে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১৯জুন শুক্রবার পর্যন্ত কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ২টি গ্রামের ১৫/২০টি বাড়ি-ঘরসহ আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে নদীর তীরবর্তী মানুষ তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজর দারী না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষজন অভিযোগ তুলেছেন।
১৯জুন শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা নদীর পানি পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চরাঞ্চলসহ অনেক নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আবাদীজমিসহ বেশ কিছু ঘরবাড়ী তলিয়ে গেছে। নদীর তীরবর্তী মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিস্তার পানির প্রবল স্্েরাতে উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা ও পাড়ামৌলা এলাকায় তিস্তা নদীর তীরে প্রচন্ড ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে তীরবর্তী মানুষজন চরম দূর্ভোগের শিকারে পড়ে। অনেকের আবাদি জমি নদী গর্ভে ভেঙ্গে পরায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়তই ভেঙ্গে যাচ্ছে বাস্তুভিটাসহ ঘরবাড়ী। ইতোমধ্যে নদীর তীরবর্তী আহাম্মদ আলী(৬০), আয়নাল হক(৩৮), আঞ্জুয়ারা বেগম(৪৮), হবিবর রহমান(৬৫), মতিয়ার রহমান(৫৫), আলমগীর হোসেন(৩২), নিশিকান্ত(৪৭), উকিল মাহমুদ(৪৫), তরনিকান্ত(৫৫), ইয়াকুব আলী(৬০), নুজাহান বেওয়া(৬০), মনসাধু(৬৫),দুলাল হোসেন(৫০) সহ প্রায় ১৫/২০টি বাড়ী-ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এ ছাড়া প্রায় ১০/১২ বিঘা আবাদি জমিও বিলীন হয়। প্রচন্ড নদী ভাঙ্গনের ফলে ঐ এলাকাটি যে কান সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। হুমকীর মুখে রয়েছে ওই এলাকার কালিরহাট বাজারসহ কালিরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও অসংখ্য ঘর বাড়ি।
এলাকাবাসির অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের সময় এমপি প্রার্থীরা নদী খননের প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচন পার হয়ে গেলে সে এসতেহার আর বাস্তবায়িত হয় না। গত বছর কিছু জিও ব্যাগ ফেললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ কোন নদী খনন ও রক্ষা বাঁধ নির্মান হয়নি। জরুরী ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।
এব্যাপারে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাইজুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ঘুরে ঘুরে ভিটামাটি হারাদের লিষ্ট করেছি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে ইউএনও মোঃ যোবায়ের হোসেন ১৯জুন শুক্রবার বলেন, তাৎক্ষনিকভাবে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় মানুষদের মাঝে খাদ্য বিতরণের আশ্বাস দিয়েছেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, এসময়টা নদীর যৌবন কাল। প্রতিবছর এ সময় পানি বৃদ্ধি, বন্যা ও ভাঙ্গন হয়। তাই নদী রক্ষা প্রকল্প করে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এমাজেন্সিতে এবারেও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।