গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, রাজেন্দ্রপুর অফিসের আওতায় কাপাসিয়া জোনাল অফিস স্থাপনের জন্য জমি ক্রয় প্রকৃয়ায় জেনারেল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে পছন্দের ব্যক্তিকে সুযোগ দিতে অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে জমি বিক্রয়ে আগ্রহী জনৈক ব্যক্তি আবেদনপত্র জমা দিতে না পেরে গত শনিবার তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি সদয় অবগতির জন্য বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপিকে অভিযোগ পত্রের অনুলিপি দেয়া হয়েছে।
জমি ক্রয় সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যায়, গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, রাজেন্দ্রপুরের অধিনে কাপাসিয়া জোনাল অফিসের জন্য উপজেলা শহর সংলগ্ন রাস্তার পাশের্^ সুবিধাজনক স্থানে ১৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করতে ইচ্ছুক। সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ হাসান শাহ্ নাওয়াজের পক্ষে দপ্তরের আইন উপদেষ্টা অ্যাড. মোজাম্মেল হক মিন্টু ১৪ ফেব্রুয়ারি ’জমি ক্রয় সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এতে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমি ক্রয় করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে নিস্কন্টক জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ সাদা কাগজে আবেদন করার জন্য বলা হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কাপাসিয়া জোনাল অফিসের জন্য যে জমি ক্রয় করতে চাচ্ছেন, তা সদর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে এবং প্রকৃত মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন মূল্য দিয়ে ক্রয় করতে চাচ্ছেন। কাপাসিয়া-ঢাকা সড়কের জামিরারচর মৌজার প্রস্তাবিত জমিটির মূল্য স্থানীয় ভাবে প্রতি শতাংশ ৩ লাখ টাকা হলেও তার স্থলে প্রতি শতাংশ ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। অথচ সদর থেকে আরো কাছে জনৈক সাখাওয়াত হোসেন তার জমিটি প্রতি শতাংশ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রয় করতে রাজি। কিন্ত তিনি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির নির্ধারিত সময় ও শর্ত মোতাবেক আবেদন করতে সংশ্লিষ্ট অফিসে গেলেও রহস্যজনক কারনে তার আবেদন গ্রহন করা হয়নি। জেনারেল ম্যানেজারের নির্দিষ্ট দালালদের কথামত গোপন আতাতে রাজি না হওয়ায় তাদের কাগজপত্র জমা নেয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে জমি ক্রয় কমিটির প্রথম সভায় বেঞ্চমার্ক মূল্য নির্ধারনে একজন সদস্য ওই জমির মূল্য প্রতি শতাংশ ৩ লাখ টাকা হবে বলে মতামত উপস্থাপন করেন। প্রথমত জিএম তার অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে না পেরে বেঞ্চমার্ক কমিটির ওই সদস্যকে বাদ দিয়ে কমিটি পুর্নগঠন করেন। পরে নতুন সদস্যকে দিয়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার অধিক মূল্য নির্ধারন করেন।
জেনারেল ম্যানেজার ইতিপূর্বে একই কায়দায় ৩৩ কেভি উপকেন্দ্র স্থাপনের জন্য কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ও টোকে জমি ক্রয় করেন। সংশ্লিষ্ট দালালরা তাদের নিজেদের পছন্দের লোকজনের নিকট থেকে জমির কাগজপত্র নিয়ে উচ্চ মূল্যে দর উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে ক্রয় কমিটির সভায় নিজেরাই প্রক্সি দিয়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তির জমি সর্বনি¤œ দর সাব্যস্ত করে ক্রয় করে থাকেন। জমি দাতার নিকট থেকে কাঠা প্রতি মূল্য নির্ধারন করে ক্রয় করা হলেও অফিসে তা প্রতি শতাংশ হিসাবে উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করা হয়। দালালরা কৌশলে জমির মোট মূল্যের অতিরিক্ত টাকা জমিদাতার নিকট থেকে নগদ চেকের মাধ্যমে আগেই নিয়ে নেয়। ফলে দালালদের মাধ্যমে জিএম বিপুল পরিমান অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে রাজেন্দ্রপুর অফিসের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ হাসান শাহ্ নাওয়াজের সাথে ২১ জুন রোববার বিকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘যেখানে জমিই ক্রয় করা হয়নি, সেখানে দূর্নীতির প্রশ্নই উঠেনা। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারনে জোনাল অফিসের জন্য জমি ক্রয়ের বিষয়টি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হলে সংশ্লিষ্ট অভিযোগকারী আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন। জমি ক্রয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ ক্রয় কমিটির এখতিয়ার, আমার একার স্বিদ্ধান্তের বিষয় না। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে সবই তাদের মনগড়া অভিযোগ’।