গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার দু,টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
উপজেলার জঙ্গল ও নারুয়া ইউনিয়ন এলাকায় গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যাপক ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বাড়ী-ঘর, গাছ-পালা ও ফসলী জমি ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের গয়াসপুর-নারুয়া, সোনাকান্দর, মরাবিলা, জামসাপুর, কোনাগ্রাম, জঙ্গল ইউনিয়নের হাবাসপুর, পাঁচপোটরা, চরপোটরা, পুষআমলা গ্রাম এলাকায় গড়াই নদীতে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। মরাবিলা, কোনাগ্রাম, জামসাপুর এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। তাও কোন মেরামত করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সামান্য চলাচলের জন্য মাটি দিয়ে রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই জরুরী পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
নারুয়া গ্রামের বাসিন্ধা মহিদুল ইসলাম শেখ, শরিফুল ইসলাম বলেন, গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙ্গনের ফলে নারুয়া, গয়াসপুর, সোনাকান্দর গ্রাম এলাকায় বাড়ী ও ফসলী জমিতে ফাটল দেখা দিছে। গাছ সরিয়ে নেওয়ার আগেই গড়াই নদীতে চলে যায়। বাড়ীর ঘরও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে এ এলাকার মানুষের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে।
তারা আরো বলেন, গত বছর বালির বস্তা ফেলানো হয়েছিল। সেসব এলাকায় ভাঙ্গন দেখা যায়নি। নারুয়া গ্রাম, গয়াসপুর, সোনাকান্দর খেয়াঘাট, মরাবিলা ঘোনা, জামসাপুর এলাকায় নতুন করে বালির বস্তা দিয়ে প্রতিরোধ কাজ হলেও এলাকার মানুষ উপকৃত হতো।
জঙ্গল এলাকার জাহিদুর রহিম বলেন, জঙ্গল ইউনিয়নের হাবাসপুর, পাঁচপোটরা, চরপোটরা, পুষআমলা এলাকায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ভাঙ্গন শুরু হয়। প্রতিবছরই ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে মানুষ। জরুরী প্রতিরোধ মুলক কাজ করলেও ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
রাজবাড়ী জেলা নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি মোঃ মোকারম হোসেন বলেন, নদী ভাঙ্গন রোধে সরকারী ভাবে পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করে তারা যাতে নতুন করে ঘর করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
নারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আবদুস সালাম মাষ্টার বলেন, নারুয়া ইউনিয়নের মরাবিলা, কোনাগ্রাম, জামসাপুর, গয়াসপুর, নারুয়া, সোনাকান্দর, বাঙ্গরদাহ এলাকায় গড়াই নদীর পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সাথে সাথে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। এ বছরও নদীতে বিলীন হয়েছে বেড়িবাঁধসহ ফসলী জমি ও ঘরবাড়ী। গয়াসপুর ও নারুয়া গ্রাম এলাকায় ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর ভাঙ্গন প্রতিরোধে নারুয়া খেয়াঘাট এলাকায় শুধু জিও ব্যাগ ফেলানো হয়। নদী গবেষনা ইনস্টিটিউটের আওতায় বাশের বেড়া প্রকল্প গ্রহন করে। মরাবিলা, কোনাগ্রাম এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করাসহ ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী।
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মাহমুদুল হাসান বলেন, গত বছর গড়াই নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলানো হয়। এতে অনেকটা উপকৃত হয়েছে এলাকার লোকজন। ওই সব স্থানে নতুন করে কোন ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়নি। এ বছর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আশা করছি ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় এ বছরও জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করা সম্ভব হবে।