লকডাউনের একঘেয়েমি কাটাতে ঘুড়ি উড়ানোতে মেতেছিল রাজশাহীবাসী। বন্দিদশার জীবনে খানিকটা আনন্দ এনেছিল ঘুড়ি। তবে এবার সেই ঘুড়ি নিয়েই বিপত্তির কথা জানিয়েছে শাহমখদুম বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, আকাশে উড়ানো ঘুড়ির কারণে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে উড়ছে এখানকার প্রশিক্ষণ বিমানগুলো। ফ্লাইং রুটে এমনটা চলতে থাকলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার শঙ্কা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরসহ পুরো মহানগরীর আকাশেই দেখা মিলছে ঘুড়ির। আর বিকেলে তাকালে মনে হয় রাজশাহীর আকাশটা পুরোপুরিই দখলে নিয়েছে বিভিন্ন ধরণের ঘুড়ি। সন্ধ্যার পর লক্ষ্য করলে ঘুড়িতে লাগানো বিভিন্ন রঙ্গের আলোর রশ্মি দেখা মেলে। যেসব রশ্মিতে আকাশের প্রকৃত তাঁরা দেখাই দুস্কর হয়ে উঠছে। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধরাও উৎসবের ন্যয় উড়াচ্ছেন এসব ঘুড়ি। তবে ক্রমেই উৎসব থেকে প্রতিযোগিতায় রুপান্তরিত হচ্ছে এ খেলাটি। আর এসব ঘুড়ির পাশ দিয়েই চক্কর দিচ্ছে প্রশিক্ষণ বিমান। ফলে আশঙ্কায় হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আর সিভিল এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্লাইং জোনে ঘুড়ি উড়ানো বন্ধ না হলে যেকোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।
অন্যদিকে ঘুড়ি উড়াতে গিয়ে একটি সাথে অন্যটির সুতা ঘর্ষনে সুতা কাঁটার ঘটনা ঘটছে। এ নিয়ে ঘুড়ি হারিয়ে যাওয়া কেন্দ্র করে ছোট ধরণের মারামারির ঘটনাও ঘটছে।
আর ঘুড়ি উড়ানো নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় দন্দ্বের ঘটনা ঘটছে স্বীকার করে পবা এলাকার মুনসুর রহমানসহ কয়েকজন কলেজ শিক্ষক বলেন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে এমনটি আমরা শুনি নাই।
এ বিষয়ে হযরত শাহমুখদুম বিমান বন্দরের ম্যানেজার সেতাফুর রহমান জানান, এমন পরিস্থিতিতে জনগণকে সচেতন করতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বেশ কয়েক বার মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু যারা ঘুড়ি উড়াচ্ছেন তারা বিষয়টি মোটেও আমলে নিচ্ছেন না।
সেতাফুর রহমান জানান, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২৪ মার্চ থেকে শাহমখদুম বিমান বন্দরে সব ধরণের বিমান উঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। তবে ইতোমধ্যে এই বিমান বন্দর থেকে দুইটি ফ্লাইং একাডেমি তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেছে। কিন্তু আকাশজুড়ে উড়ানো ঘুড়ির কারণে অনেকটা ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি কিছু ঘুড়ি অনেকটা উপরে ফ্লাইং রুটে উড়ছে এমনটা চলতে থাকলে ঘুড়ি ও ঘুড়ির সুতার কারণে বড় ধরণের দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকছে। তাই বিষয়টি ঊর্ধোতণ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশাকরছি অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে সরকারীভাবে নির্দেশনা পাওয়া যাবে।