সারাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল নেওয়া বন্ধ থাকায় এখন তা একসাথে তিন চার মাসের বিল প্রদানে বাধ্য করা অন্যথায় জরিমানা ধার্যের সরকারী ঘোষণা এবং গতকাল সংসদে বছরে একাধিকবার বিদুৎ-জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২০-এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে করোনা মহামারী মোকাবেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মহীন জনগোষ্ঠিসহ ভুক্তভোগিদের সহায়তার দাবি করেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এর সভাপতি ডা. এম এ করিম ও সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম জাহাঙ্গীর হুসাইন। নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ সময় সাধারণ ছুটির নামে কার্যত দেশ অচল থাকায় এবং পরবর্তি সময়েও সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে স্বাভাবিক অর্থনীতি চালু না হওয়া সত্ত্বেও সরকার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল প্রদানসহ অনেক ক্ষেত্রে জুলুম শুরু করেছে। এমনিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাহকের উপার্জন নাই, হাতে টাকাণ্ডপয়সা নাই এমন সময় অনেকে অভিযোগ করছেন মিটার না দেখে ইচ্ছামতো বিল করা হয়েছে এবং অভিযোগ করতে গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা আমলে না নিয়ে বর্ধিত বিলটি পরিশোধ করতে বলছে। এ সময়ে পরিশোধিত বর্ধিত অর্থ পরবর্তিতে সমন্বয়ে কথা বলে গ্রাহকদের সাথে একরকম তামাশা করছে সরকার। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এ জুলুম ও তামাশা বন্ধ করে কর্মহীন বৃহত জনগোষ্ঠির বিল মওকুফ, অতিরিক্ত চার্জ ছাড়াই বিল পরিশোধের সময় বৃদ্ধি ও ৫শ থেকে ৩হাজার টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারীদের কিস্তিতে বিল পরিশোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবি করেন। যেভাবে শিল্পখাতের নেতৃবৃন্দ ইতিমধ্যেই ছয় মাসের কিস্তিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল পরিশোধের সুবিধা চেয়েছেন। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মঙ্গলবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২০’ সংসদে উত্থাপন করেছেন। যখন বিশ্বব্যাপি জ্বালানী তেলের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে, দেশের অর্থনীতি স্থবির ও কর্মহীন জনগণের জীবন-জীবিকা পরিচালনায় কঠিন হয়ে পড়েছে তখন বিদ্যুৎসহ জ্বালানী খাতকে জনস্বার্থে মূল্য কমিয়ে সমন্বয়ের পরিবর্তে বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম পরিবর্তনের সুযোগ রাখা গণবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী। নেতৃবৃন্দ এহেন জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপ প্রত্যাহার করারও জোর দাবি জানান। উল্লেখ্য, নতুন আইন কার্যকর হলে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বছরে এক বা একাধিকবার বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডিজেল, পেট্রোলসহ জ্বালানির দাম পরিবর্তনের নামে বৃদ্ধি করতে পারবে।