তানোরে পরোকিয়া প্রেম করে গ্রামবাসীর রসানলে পড়া সেই ৫ সন্তানের জননী দু’কুল হারিয়ে এখন দিশা হারা। ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে বিচার পওায়ার প্রহর গুনছেন। ঘটনাটি ঘটেছে তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউপি’র বিহারইল গ্রামে। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভুগি সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার বিহারইল গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে নুরুন্নবী (২৫) (ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার) এর সাথে র্দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার জৈনক ব্যাক্তির স্ত্রী (৫ সন্তানের জননী)’র সাথে প্রেমের সম্পর্কের সুত্র ধরে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে।
গত (২৩ শে মার্চ) সোমবার সন্ধ্যায় আপত্তিকর অবস্থায় ইঞ্জিনিয়ার প্রেমিক নুরুন্নবীর ঘরে গ্রামবাসী প্রেমিক যুগলকে আটক করেন। পরে ওইদিন রাতেই উৎসুখ জনতার সামনে প্রেমিক যুগলের স্বিকারক্তি ও সম্মতিতে গ্রামবাসী শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্থানীয় কাজী ডেকে প্রেমিকা (৫ সন্তানের জননী) কে তার স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স করানো হয়।
পরে ওই শালিস বৈঠকেই মান্দা উপজেলা এলাকা থেকে জৈনক এক কাজীকে ডেকে এনে ৪লাখ ৮৫হাজার টাকা দেন মোহর ধার্য্য করে প্রেমিক যুগলকে বিয়ে দেয়া হয়। ইউপি সদস্যসহ গ্রামের মাতাব্বরদের করা শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও প্রেমিক নুরুন্নবীর পরিবার ওই বিয়েটি মেনেনিতে পারেননি।
ফলে ঘটনার পরদিন থেকেই প্রেমিকার উপর শুরু হয় মানসিক ও শারিরিক নির্যাতন। দফায় দফায় বিভিন্ন আতœীয়ের বাড়িতে নিয়ে প্রেমিকা (৫সন্তানের জননী) কে নির্যাতন করতে থাকে প্রেমিক নুরুন্নবী ও তার স্বজনরা।
গত (৩ই জুন) ইঞ্জিনিয়ার প্রেমিক ও তার স্বজনরা প্রেমিকা (৫সন্তানের জননী) কে নির্যাতন ও মারপিট করে আহত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে ওইদিনই আহত অবস্থায় প্রেমিকা (৫ সন্তানের জননী) কে উদ্ধার করে তার ভাই গত (৪ই জুন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করেন।
এদিকে ইঞ্জিনিয়ার প্রেমিক নুরুন্নবী তার প্রেমিকা (৫ সন্তানের জননী) কে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়ার খবর শুনে প্রেমিকার স্বামী গত (৪ই জুন) অন্যত্র বিয়ে করেন।
বর্তমানের প্রেমিকা তার ভাইয়ের বাড়িতে অবস্থান করে গ্রাম্যমাতাব্বর ও ইউপি সদস্য’র কাছে বিচার প্রার্থী হন। কিন্তু গ্রাম্য মাতাব্বর ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বিচারের আশ্বাষ দিলেও কোন বিচার করে না দিয়ে প্রেমিকাকে ২০হাজার টাকা নিয়ে আপোষ মিমাংসার জন্য চাপ দিচ্ছেন।
এনিয়ে প্রেমিকার ভাই বলেন, গ্রামের মাতাব্বররা ওই সময় আইনি কোন ব্যবস্থা নিতে বাধা দিয়ে বিচার করে আমার বোনের সংসার ভেঙ্গে প্রেমিকের সাথে বিয়ে দিলেন। কিন্তু এখন আর কোন বিচার না করে ২০হাজার টাকা নিয়ে আপোষ করে নিতে উল্টো হুমকি দিচ্ছেন।
এনিয়ে কামারগাঁ ইউপি’র ১নং ওয়ার্ড সদস্য আলাউদ্দিন বলেন, ঘটনাটি আমার ওয়ার্ডের না তারপরও আমাকে ডাকা হয়েছিলো দুজনের সম্মতিতে বিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মারপিট করে প্রেমিকাকে তাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি এবং আইনি ব্যবস্থার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।
গ্রামের মাতাব্বর অহিদুল ইসলাম হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের সাথে এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি না হয়ে এড়িয়ে যান।
এবিষয়ে প্রেমিক নুরুন্নবীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বাড়িতে ঢুকে যান এবং কোন কথা বলতে রাজি হননি।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।