করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের মানুষ যখন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি গ্রস্থ, ঠিক সেই সময়ে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার যাদুরানী পশুরহাটে সরকারি বিধি-নিষেধ তোয়াক্কা না করে অনিয়মভাবে ক্রেতা-বিক্রেতাগণের নিকট থেকে হাট ইজাদার ইচ্ছা মাফিক অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। টোল আদায়ের নামে চলছে নীরব চাঁদাবাজি। হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
প্রকাশ্যে হাট ইজারদার সরকারি মূল্যের চেয়েও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন রয়েছে নীরব।
এদিকে হাট বুঝে নেয়ার ২ মাস ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও টাঙানো হয়নি টোল আদায়ের সরকারী মূল্য তালিকা।
উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাংলা ১৪২৭ সালের জন্য যাদুরানী হাট ১ কোটি ৬০ লাখ ১০ হাজার ৫শ’ টাকায় ইজারা প্রদান করা হয়েছে। হরিপুর উপজেলার ১নং গেদুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ হাটটি ইজারা নিয়েছেন।
সরকারীভাবে প্রতিটি গরু-মহিষের জন্য ২৩০/ টাকা ও ছাগল-ভেড়ার জন্য ৯০ টাকা হারে টোল নির্ধারণ রয়েছে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করে।
হাট-ইজারাদার প্রভাবশালী হওয়ার ফলে প্রতিবাদ করেও ক্রেতা-বিক্রেতাগণ এর কোন সুফল হচ্ছে না। ২৩ জুন মঙ্গলবার যাদুরানী হাটে সরজমিনে গিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায়ের সত্যতা পাওয়া যায়। ছারপত্র লেখাইকারীগণকে প্রতিটি গরু-মহিষ ২৭০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগল ৯০ টাকা টোল আদায় করতে দেখা গেছে। তাদেরকে অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, হাট ইজারা মালিক আব্দুল হামিদকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনিই বলতে পারবেন। হাট ইজাদার আমাদের গরু ও মহিষ প্রতি ২৭০ টাকা এবং ভেড়া ও ছাগল প্রতি ১৩০ টাকা করে নিতে বলছে তাই আমরা নিচ্ছি। এর কমে আমরা ছারপত্র দিতে পারবো না। এতে যার ইচ্ছা সে ছাড়পত্র করবে।
হরিপুর, রানীশকৈল, পীরগঞ্জ ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাসহ জেলা ও জেলার বাইরে থেকে যাদুরানী হাটে আসা একাধিক গরু ও ছাগল ক্রেতা জানান ইজাদারের ছাড়পত্র না নিলে আমাদের ক্রয় করা গরু বা ছাগল হাট থেকে বের করতে দিবে না, ইজারাদারের লোকজন। তাই বাদ্ধ্য হয়ে গরু-মহিষ প্রতি ২৭০ টাকা এবং ছাগল-ভেড়া প্রতি ১৩০ টাকা দিয়েই ছাড়পত্র নিতে হচ্ছে। তারা আরো জানান, ইজাদার প্রভাবশালী হওয়ার কারণে অভিযোগ করেও কোন লাভ নেই। উল্টো অভিযোগকারীকে হয়রাণীর স্বীকার হতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিমকে যাদুরানী হাটের গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া প্রতি সরকারি নির্ধারিত টোল আদায়ের নির্দিষ্ট ফি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান সরকারি নির্ধারিত যে পরিমাণ টোল আদায়ের কথা বলা আছে এর চেয়ে বেশি নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইজারাদার আব্দুল হামিদ অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, যাদুরানী স্কুল কর্তৃপক্ষকে গরু প্রতি ২০ টাকা করে দিতে হয় তাই অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে।