পাবনায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ভয়ানক রুপ ধারন করছে। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা। বুধবার মারা গেছেন দুইজন। একজন করোনা পজেটিভ এবং অন্যজন করোনা উপসর্গ নিয়ে। নতুন আক্রান্ত হয়েছে আরও ৭৯ জন। এর মধ্যে রাজশাহী ল্যাবে ৩১ এবং ঢাকায় ৪৮ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত পাবনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪১৫ জন। চাটমোহর উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়,নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পাবনার দুইজন মারা যান। এদের মধ্যে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। আর অপরজন করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন,জানিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস। মারা যাওয়া করোনা আক্রান্ত ব্যাক্তি হলেন,পাবনা শহরের নয়নামতি এলাকার আ.কুদ্দুসের ছেলে লিয়াকত আলী (৬০)। তিনি পাবনা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলের অফিস সহকারী ছিলেন। সম্প্রতি সে জ¦র,সর্দি,কাশিসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনা পরিক্ষায় তার পজিটিভ আসে। এক পর্যায় তার অবস্থার অবনতি হলে ২২ জুন তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যাক্তি হলেন,পাবনা সদর উপজেলার শালগাড়ি গ্রামের আলতাফ হোসেন (৬২)। পাবনায় এ পর্যন্ত ১৩ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এদের মধ্যে কারো কারো নমুনায় নেগেটিভ রেজাল্ট এসেছে।
পাবনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্ত সবাইকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১২ জন। সবারই শারীরিক অবস্থা বুঝে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত পাবনায় করোনায় ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চাটমোহরে গত ১৬ এপ্রিল। এদিকে,পাাবনায় করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়লেও পিসিআর ল্যাব না থাকায় সাধারন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। জেলার নয় উপজেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পাঠাতে হচ্ছে রাজশাহী অথবা ঢাকা। এতে ফলাফল পেতে বিলম্ব হচ্ছে। বিশেষ করে নমুনা দেয়ার পর ফলাফল পেতে সময় লাগছে পাঁচ থেকে দশ দিন পর্যন্ত। আর এই ফলাফল আসতে বিলম্ব হওয়ায় নমুনা দেয়া ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত কিনা স্বল্প সময়ে জানতে পারছে না। এতে আরও ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতি এই ভাইরাস।
পাবনা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাব না থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে রাজশাহী। এখনো দুই হাজারের উপরে নমুনার ফলাফল আসে নাই। এই ফলাফল আসতে সময় লাগছে নমুনা সংগ্রহের পর পাঁচ থেকে দশ দিন। এ সময়ের মধ্যে নমুনা দেওয়ার পর সম্ভাব্য করোনা রোগীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে। তাদের নেই কোন মনিটরিং। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্তদের শরীরে তেমন উপসর্গ না থাকায় অনেকে বুঝতেও পারছেন না তিনি করোনা পজিটিভ কি না। ফলে ওই ব্যক্তি নিজের পরিবারসহ অন্যান্যের সংস্পর্শে গিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন।