ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গৌরনগর গ্রামে, পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০১৮ সালে জয়নাল আবেদীন ও দুলাল মিয়া খুনের ঘটনায় আদালতের নির্দেশনায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১০৪ জনের এজাহার নামীয় ওই আলোচিত মামলায় ৪৪ জনকে আসামি করে এবং ৬০জনকে অব্যহতি দিয়ে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। জোড়া খুনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নতুন করে আসামী হয়েছেন কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান ও বীরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হোসেন সরকার।
জানাযায়, উপজেলার গৌরনগর গ্রামের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই গ্রামের আজাইরা গোষ্টি ও সরকার বাড়ির গোষ্টির মধ্যে বিরোধ চলে আসছে কয়েক যুগধরে। তাদের সংঘর্ষে প্রান হারিয়েছেন ৬ জন । গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে পূর্ব বিরোধের জেরধরে আজাইরা বাড়ির জয়নাল আবেদীন ও তার চাচাতো ভাই দুলাল মিয়া স্থানীয় চক বাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে একদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা দুজন মারা যায়। এ ঘটনায় জয়নাল মিয়ার ছেলে শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে ১ অক্টোম্বর ২০১৮ সালে, নবীনগর থানায় ১০৪ জনের নাম পরিচয় উল্লেখ সহ ৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে এজাহার দায়ের করেন। পরে বাদী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়।
মামলাটি থানা পুলিশ হতে এস আই মো. মিজানুর রহমানের কাছে (পিবিআই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার) তদন্তভার দেওয়ার পর ১৪ আগষ্ট ২০১৯ থেকে তিনি মামলাটির তদন্ত গোপনে ও সরেজমিনে শুরু করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে ২০ অক্টোম্বর ২০১৯ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান সরকারের উপর। ১০৪ জনের জনের এজাহার নামীয় জোড়া খুনের আলোচিত ওই মামলাটি তিনি দীর্ঘ দিন তদন্ত শেষে ১২ জুন ২০২০ বিজ্ঞ আদালতে মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছেন ৪৪ জনের নামে। তদন্তকালে এই জোড়া খুনের ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ মামলায় নতুন করে আসামী করা হয়েছে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও বীরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হোসেন সরকারকে। এ মামলায় আগে থেকেই আসামী ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জি টিভির প্রতিনিধি জহির রায়হান। তদন্ত কালে এজাহার নামীয় ৬০ জন আসামীর বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ ও ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সাক্ষ্য প্রমান না পাওয়ায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিতে চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন জানান,কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গৌরনগর গ্রামের জোড়া খুনের মামলায় বর্তমানে ২জেল হাজতে আটক রয়েছেন,বাকিরা জামিনে রয়েছেন। অপর দিকে অন্য একটি মামলায় জেল হাজতে আটক রয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান।
মামলার বাদী শরীফ উদ্দিন বলেন, তদন্ত ও মামলার চার্জশিট দেওয়ার বিষয়টি আমি খুশি। দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে জহির রায়হান বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার আমি, আমাকে হয়রানী করার হীন উদ্যোশে আসামী করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে কোনভাবেই জড়িত নয়, মামলাটি আইনিভাবে মোকাবেলা করা হবে। অপর আসামী হোসেন সরকার বলেন,আমি জীবনে দুইবার দুটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গৌরনগর গিয়েছিলাম। আমি রাজনৈতি প্রতিহিংসার স্বীকার। আমি মামলায় আসামী হয়েছি (বৃহস্পতিবার)আজকে জানতে পেরেছি।