তিস্তা নদীর পানি অব্যাহত ভাবে বৃদ্ধি পেয়েই চলেছে। যা বিপদসীমায় দন্ডায়মান। ২৪ ঘন্টার বেশী সময় ধরে উত্তরের এই নদীটির পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে চলেছে। নদী অববাহিকাসহ নিমাঞ্চল এখনও রয়েছে প্লাবিত। চরবেষ্টিত গ্রামগুলোর অসংখ্য ঘরবাড়ির ভেতর দিয়ে নদীর পানি বয়ে চলেছে।
শনিবার(২৭ জুন) সকাল ৬টায় দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯টায় তা দুই সেন্টিমিটার কমে আসে। তবে দুপুরের পর উজানের ঢল বৃদ্ধি পাওয়ায় আরো ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার(২৬ জুন) তিস্তা নদীর পানি একই পয়েনেট ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। বর্তমানে পানির প্রবাহ চলছে ৫২ দশমিক ৮০ মিটার। যা প্রতি মুহুর্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিস্তার ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরন কেন্দ্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায় গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তা অববাহিকায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭৭ মিলিমিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ জানান পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ জলকপাট ২৪ ঘন্টায় খুলে রাখা হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাস (ফ্লাড ফিউজ) এর কাছে ঢলের পানি এখনও ৪ ফিড নিচে থাকায় লাল সংকেত জারি করার পরিস্থিতি হয়নি। তবে হলুদ সংকেতের মাধ্যমে তিস্তাপাড়ের মানুষজনকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে সৃষ্ট বন্যায় হাতীবান্ধার উপজেলার তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ওই ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। ওই সব এলাকার অনেক বসত বাড়িতে পানি উঠেছে। এতে লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী-ডালিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিন ধরে ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান বলেন, যেভাবে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে এই ইউনিয়নের মানুষ অত্যান্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এজন্য তিনি এই এলাকার পানি বন্দি লোকজনের প্রতি সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তার দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানান। সেই সাথে পানিবন্দি এসব লোকজনকে সরকারী সাহায্যের আবেদনও করেন তিনি।