নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে চাঁদখানা ইউনিয়নের ভিজিএফের চাল আত্মসাতের তদন্ত দামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে। ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে ওই কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম গুটিয়ে নথি ফাইলবন্দি করেছেন। ফলে ১০ মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখতে পারে নাই। এতে জেলা প্রশাসকের অতিসত্বর তদন্তের নির্দেশ অকার্যকর হয়েছে।
জানা য়ায়, গত ঈদুল আজহায় চাঁদখানা ইউনিয়নের ৫ হাজার ৬৮৪ জন অসহায়, দুস্থ ও হতদরিদ্র সুবিধাভোগীর জন্য ৮৫.২৬০ মে:টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ হয়। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান হাফি ভুয়া মাষ্টাররোল দাখিলের মাধ্যমে বরাদ্দের প্রায় আর্ধেক চাল আত্মসাৎ করেন। তালিকাভুক্ত অসংখ্য সুবিধাভোগী এক ছটাক চালও না পাওয়ায় ১৫ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। দৈনিক যুগান্তরে ১৭ সেপ্টেম্বর ভিজিএফের চাল আত্মসাতের সংবাদ প্রকাশ হয়। জেলা প্রশাসক বিষয়টি অতিসত্বর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। আদিষ্ট হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে তদন্তভার দেন। কমিটির সদস্যরা হলেন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন ও ত্রাণ শাখার প্রকৌশলী আবু সাঈয়িদ। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান তদন্ত কার্যক্রমের শুরুতেই টালবাহানার আশ্রয় নেন। পরে সাজানো মঞ্চে লোক দেখানো তদন্তের জন্য কমিটির প্রধানসহ সদস্যরা দু’একদিন এলাকা ঘুরে আসেন। ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য তদন্ত কমিটির প্রধান ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগসাজশ করে তদন্ত কার্যক্রম গুটায়ে নেন। সুবিধাবঞ্চিত অসহায়, দুস্থ ও হতদরিদ্রদের ভিজিএফের চাল আত্মসাতের তদন্তের নথি ফাইলবন্দি করে রাখেন। জেলা প্রশাসকের দ্রুত তদন্তের নির্দেশ অকার্যকরে তদন্তকারী কর্মকর্তার খুঁটির জোর কোথায় সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘ ১০ মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ না দেখায় অভিযোগকারীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আশরাফুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে তদন্ত ধামাচাপা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, তদন্ত চলছে, এখনো শেষ হয়নি। কমিটির সদস্যদের সমন্বয়হীনতার কারণে তদন্তে বিলম্ভ ঘটছে। তদন্ত শেষ হলেই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।