সরাইলের অপহৃত দুই যুবককে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণকারী চক্রের নারীসহ ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী গ্রামের (হ্যালো ব্যাকারীর গলি) আজমল হোসেন ভূইয়ার বাড়ির চতুর্থতলার ভাড়াটিয়া শাহ আলম ওরফে পলাশ-(৪০) এর বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার ও অপহৃত দুই যুবককে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া যুবকরা হলেন সরাইল উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ সোহেল মিয়া (২৪) ও একই এলাকার আরিস ঠাকুরের ছেলে কুতুব মিয়া-(২৮)। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অপহরণকারীরা তাদেরকে মুক্তিপনের জন্য অপহরণ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামের বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী লুৎফা বেগম-(৩২), একই গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল-(২৫), কসবা উপজেলার শিকারপুর গ্রামের শাহ আলম ওরফে পলাশ-(৪০), পলাশের স্ত্রী আইরিন আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের আবন আলীর কন্যা পলি আক্তার- (২৮), পৌর এলাকার দাতিয়ারা গ্রামের মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে আসাদুজ্জামান মিশাল-(২৮), পৌর এলাকার কাজীপাড়া গ্রামের খায়ের মিয়ার ছেলে জাবেদ-(৩৪) ও নবীনগর উপজেলার বান্ডুসার গ্রামের নূরূল ইসলামের ছেলে মামুন-(২৩)।
পুলিশ জানায়, অপহরণকারী লুৎফা বেগম মোবাইল ফোনে সখ্যতা গড়ে তুলে সরাইল উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের সোহেল মিয়া ও কুতুব মিয়ার সাথে। গত শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ভিকটিম মোঃ সোহেল মিয়া ও কুতুব মিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী গ্রামের আজমল হোসেন ভূইয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া কসবা উপজেলার শিকারপুর গ্রামের শাহ আলম ওরফে পলাশের বাসায় যেতে বলে লুৎফা। সোহেল ও কুতুব লুৎফার ডাকে সরাইল থেকে দ্রƒত চলে যায় পলাশের বাসায়। পরে বাসায় থাকা অন্যান্য অপরহরণকারীরা পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক ভিকটিম সোহেল এবং কুতুব মিয়াকে আটক করে তাদের হাত ও চোখ বেঁধে ফেলে। পরে অপহরণকারীরা তাদের আত্মীয় স্বজনের কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করতে থাকে। অপহরণকারীদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে অপহৃত যুবকদের পরিবারের লোকজন বিষয়টি সরাইল থানা পুলিশকে অবহিত করেন।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন রেজার নেতৃত্বে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহরণকারীদের স্থান চিহ্নিত করে গভীর রাতে অভিযান পরিচালনা করেন। পরে গতকাল রোববার ভোর রাতে ৮ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে তাদের কাছ থেকে অপহৃত দুই যুবককে উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন রেজার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাদার অপহরণকারী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অপহৃত সোহেলের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা ও কুতুব উদ্দিনের পরিবারের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে ও অপহরণকারীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।