কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সম্পত্তি থেকে ওয়ারিশানদের বঞ্চিত করে বড় ভাই মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে দুলালের বিরুদ্ধে অপ্রকৃস্থ, জ্ঞানহীন-উন্মাদ পিতার ১০৮ শতাংশ ভূমি জোরপূর্বক লিখে নিয়ে দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওয়ারিশানদের ভয়ভীতি ও কৌশলের আশ্রয় নিয়ে প্রথমে অসুস্থ পিতাকে নিজের কব্জায় নেন। বর্তমানে প্রায় ৩ মাস ধরে পিতাকে অবরুদ্ধ করে রাখায় বড় ভাইয়ের প্রভাবে সম্পত্তির অংশীদারি ভাইবোনেরা পিতার কাছে যেতে পারছেন না। এ অবস্থায় অবরুদ্ধ পিতাকে উদ্ধার করাসহ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে যাতে জমির নামজারি করতে না পারে সেজন্য আকুতি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও অংশীদারি স্বজনরা জানায়, কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের গাংকুলপাড়ার বয়োবৃদ্ধ মোঃ সিরাজ উদ্দিন ওরফে সুরুজ মিয়া ব্রেইন স্টোকে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩ বছর ধরে শয্যাশায়ী। বর্তমানে তিনি অপ্রকৃস্থ, জ্ঞানহীন ও উন্মাদ। তার সংসারে তিন ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে মেজো ছেলে মোঃ মজিবুর রহমান প্রবাসী, ছোট ছেলে মোঃ মুখলেছুর রহমান নিজবাড়িতে ও বোনেরা স্বামীদের কাছে থাকেন। এ সুযোগে আচমিতা মৌজায় আর.এস. খতিয়ান নং-৪৯৬, আর.এস দাগ-৮১৯, শ্রেণী-কান্দা ১০৮ শতাংশ ভূমি (দলিল নং-১৯৮৮, তাং ১৯/০৩/২০২০) অসুস্থ পিতার কাছ থেকে টিপসহি জালিয়াতি করেন। বিষয়টি সহোদর ভাইবোনেরা গত ১৪ জুন জ্ঞাত হইয়া ১৭ জুন তারিখে দলিলের সইমুরি নকল উঠাইয়া সত্যতা পায়। পরে ওয়ারিশানগণ একত্র হয়ে আদালত বন্ধ থাকায় তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায় বিচারের স্বার্থে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
গতকাল সরেজমিনে পার্শ্ববর্তী আচমিতা গ্রামে বড় ছেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বয়োবৃদ্ধ পিতাকে অযতœ অবহেলায় বসতঘরের মাটির মেঝেতে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বোধশক্তি হারিয়ে ফেলায় কাউকে চিনতে পারছেন না। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা আসার খবর পেয়ে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে দুলাল বাড়ি থেকে সটকে পড়েন। পরে তার স্ত্রী হাসনা বানু শ্বশুড়ের সেবাযতেœর বিনিময়ে জমি লিখে নেওয়ার কথা গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেন।
প্রতিবেশী গাংকুলপাড়ার শহীদুল্লাহ জানান, অসুস্থ অচেতন পিতার দুর্বলতার সুযোগে ভাইবোনদের বঞ্চিত করে বড় ছেলে প্রভাব খাটিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পত্তির সিংহভাগ দখলে নিয়েছেন। বিষয়টি খুবই অমানবিক। আদালত বন্ধ থাকায় সম্পত্তির অংশীদারিরা এখন সুবিচারে আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
এ ব্যাপারে কটিয়াদী উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা (এসিল্যা-) আশরাফুল আলম গণমাধ্যমে জানান, জনগণ যাতে ভূমি নিয়ে কোনরকম হয়রানি শিকার না হন, সেজন্যই তিনি চেয়ারে বসেছেন। এ সময় তিনি অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।