নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সোমবার তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৫২) ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও তিস্তা নদীর অভ্যন্তরে চরাঞ্চলের বসতভাড়ীতে বন্যার পানি বয়ে যাওয়ায় ঘরবাড়ী নিরাপদস্থানে সড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। ডিমলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মেজবাহুর রহমান মানিক বলেন, উপজেলার বন্যাকবলিত ৬টি ইউনিয়নে তিস্তার বন্যায় দুর্গতদের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয় অধীনে পানিবন্দি ৩২২০টি পরিবারের জন্য ৪৮.৬৭৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়, বন্যার কারণে বাড়ী ভাঙ্গা ৬৭টি পরিবারের মধ্যে ২২টি পরিবারের মাঝে নগদ ২ হাজার করে টাকা ও শুকনো খাবার বিতরন করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া বিভাগের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিন ধরে উজানের ঢলে তিস্তার নদীর পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার (৫২দশমিক ৮০) ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসায় তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে তিস্তা অববাহিকার ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চরাঞ্চল ও গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৩২২০টি পরিবারের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
এদিকে উজানের ঢল কিছুটা কমে আসায় সোমবার বিকেলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমে আসে। সকাল ৬টায় তিস্তায় পানি(৫২ দশমিক ৬৫) ৫সেন্টিমিটার উপড় দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুপুওে তা কমতে শুরু করে। বিকেল পয্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৫২) ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে যে কোন সময় উজানের ঢল নেমে এলে এতে নদীর পানি পুনরায় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। বর্তমানে নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নেমে আসায় তিস্তার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
অপরদিকে ডিমলা উপজেলার বন্যাকবলিত পূর্বছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, ঝুনাগাছচাপানী, খালিশাচাপানী, গয়াবাড়ী ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নে বন্যার কারণে পানিবন্দি ৩ হাজার ২২০টি পরিবারের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয় অধীনে প্রতিটি পরিবারের জন্য ১৫ কেজি করে মোট ৪৮.৬৭৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হযেছে। তবে জনপ্রতিনিধিরা বলছে, বন্যা দূর্গতদের জন্য সরকারের পক্ষ হতে যে ত্রান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তা প্রয়োজনের ত’লনায় অপ্রতুল। ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় বলেন, প্রতিদিন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ইতোমধ্যে বন্যার কারণে ঘড়ভাঙ্গা পরিবারের মাঝে নগদ টাকা ও শুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে। পানিবন্দি বাকি পরিবারগুলির জন্য সরকারের দেয়া নির্দেশ অনুযায়ী বরাদ্দকৃত প্রতিটি পরিবারে ত্রানের ১৫ কেজি করে চাল বিতরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এ ছাড়া তিস্তার বন্যা এলাকা সার্বক্ষনিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে।