রাজশাহীর তানোর থানা মোড়ের মুন্ডুমালা রাস্তায় ব্যাপক ভাঙ্গা চুড়া ও গর্ত। ফলে এসব গর্তে পানি জমে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে মারাতœক বিপর্যয় ঘটছে। এতে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গুরুত্বপৃর্ণ এই মোড়ের ভাঙ্গা রাস্তা ও গর্ত জরুরি ভিত্তিতে মেরামত ও সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা। অপরদিকে, উপজেলার বিভিন্ন কাঁচা-পাকা রাস্তা দখল করে ধান ও খড় শুকানো চলছে। ফলে, একদিকে যেমন স্বাভাবিক চলাফেরায় মানুষ বাধাঁগ্রস্থ হচ্ছে তেমনি ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে দূর্ঘটনা।
সরজমিনে দেখা গেছে, তানোর থানা মোড় জিরোপয়েন্ট থেকে মুন্ডুমালা রাস্তায় প্রায় দেড়’শ গজ দূরে প্রেসক্লাব ও সোনালী ব্যাংকের সামনে রাস্তা ভেঙ্গে বিভিন্ন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বর্ষার পানি জমে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে বিঘœ ঘটছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বেশ কয়েক মাস ধরে রাস্তা ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হলেও মেরামত ব্যাপারে উদাসীন কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে, তানোর সদর থেকে আমনূরা ও তানোর থানা মোড় থেকে চৌবাড়িয়া হাট ছাড়াও তালন্দ থেকে বিল্লিহাট পর্যন্ত গ্রামীণ কাঁচা-পাকা রাস্তায় চলছে ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর কাজ। এহেন সময় বৃষ্টির পানিতে খড় ভিজে যাচ্ছে। এসব ভেজা খড় আর রাস্তা থেকে সড়ানো হচ্ছে না। এতে রাস্তা ভিজে পিচ্ছিল হচ্ছে।
ফলে প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে বিভিন্ন যানবাহন। এরমধ্যে রয়েছে বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মোটরসাইকেল ছাড়াও অটোভ্যান ও ইজিবাইক। ঝুঁকিপূর্ণ এসব রাস্তায় চালকরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সার্বক্ষণিক দূর্ঘটনার স্বিকার হচ্ছে। আবার রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে অনেক স্থানে যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে বাড়ছে দূর্ঘটনা।
তবে, এনিয়ে কৃষি শ্রমিক ও কৃষকরা বলছেন, আলু চাষের পর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়। একারণে এই ধান চাষ সময় উপযোগী নয়। ভরা বর্ষা মৌসুমে এ ধান কর্তন হয়। ফলে খড় ও ধান ভিজে যায়। এসব ভেজা ধান ও খড় শুকানো বাড়িতে জায়গার অভাব। নিরুপাই হয়ে তারা রাস্তাতেই ধান মাড়াই ও খড় শুকাতে বাধ্য হচ্ছে। তারা আরও বলছেন, রাস্তায় ধান মাড়াই ও খড় শুকানোয় যানবাহন চলাচলে কিছুটা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হলেও কিছু করার নেই।
অপরদিকে, যানবাহন চালকরা বলছেন, চলমান রাস্তায় ধান মাড়াই ও খড় শুকানোর ফলে যানবাহন চলাচলে যেমন ঘটছে দূর্ঘটনা তেমনি ভাবে রাস্তাগুলোও নষ্ট হচ্ছে। তারা আরও জানান, কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা রাস্তায় ধান মাড়াইয়ের পর অনেকেই খড়গুলো রাস্তাতেই ফেলে রাখে। ফলে, খড়ে বৃষ্টির পানি জমে। এসব খড়গুলো ভিজে পঁচে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনাও ঘটছে। এ ছাড়া ভিজা খড়ে চাকা সিলিপ করে প্রায়ই ঘটছে দূর্ঘটনা। বিশেষ করে বাইসাইকেল, অটোভ্যান, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও অটোরিকশা চলাচলের ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা হচ্ছে।
তানোর এলজিইডি প্রকৌশলী মামুনূর রশিদ বলেছেন, রাস্তায় খড় শুকানো মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। করোনায় অফিস থেকে বের হওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া বিশেষ করে থানা মোড়ে ভাঙ্গা রাস্তা মেরামতের জন্য তিনি আন্তরিক। কিন্তু উপায় নেই বলে এড়িয়ে যান তিনি।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, সড়কে ধান ও খড় শুকানো উচিত নয়। এ বিষয়ে কৃষক ও শ্রমিককে সচেতন করা হবে। তারপরও সমাধান না হলে জনস্বার্থে অভিযান চালিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।