ফরিদপুরের বোয়ালমারীর রুপাপাত ইউনিয়নের টোংরাইল খালের সরকারী জায়গা দখল করে বেশকিছু দোকান ঘর উত্তোলন করায় সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সরকারী সম্পত্তি রক্ষা ও অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করায় উল্টো সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে তাদের বিপাকে ফেলার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। অবৈধভাবে দোকান ঘর উত্তোলন নিয়ে এলাকায় দুটি গ্রুপের পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেওয়ায় সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে থাকা রুপাপাত ইউনিয়নের টোংরাইল খালটির বেশকিছু অংশ সম্প্রতি খনন করা হয়। খালটি খননের আগে ব্রীজের কাছে আনন্দ বিশ্বাসসহ কয়েকজন দোকান ঘর তুলে সেখানে ব্যবসা করে আসছিল। গত দুই মাস আগে খালটি খনন করা হলে সেই দোকান তুলে দেওয়া হয়। খালটি খননের পর পুতুল রানী বিশ্বাস গং পূর্বে যারা দোকান তুলে ব্যবসা করে আসছিল তাদের বাদ দিয়ে নিজেরা রাতের আঁধারে ৮/১০টি দোকান ঘর উত্তোলন করে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য ইউএনও দায়িত্ব দেন ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তাকে। ভুমি কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত কালে অবৈধভাবে দোকান ঘর উত্তোলনকারীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং নাজেহাল করে। সরকারী জমি দখলের বিষয়টি সত্যতা পাওয়ায় ভুমি কর্মকর্তা দোকান ঘর গুলো সরিয়ে নেবার অনুরোধ করে সেখান থেকে চলে আসেন। পরবর্তীতে ইউএনও ঝোটন চন্দ সরেজমিন তদন্ত করতে গেলে অবৈধ দখলদারেরা তার সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং সরকারী কাজে বাঁধা দান করেন। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে নোটিশ প্রদান করার পর স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি ইউএনও’র বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা নামে বেনামে ইউএনও’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেন। স্থানীয়দের কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা জানান, সরকারী এ খালটির একটি অংশ লিজ না নিয়ে কয়েকজন দোকান তুলে ব্যবসা করে আসছিল। কিন্তু খালটি খননের পর আগে যারা দোকান তুলেছিল তাদের বাদ দিয়ে প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে নতুন বেশকিছু দোকান ঘর উত্তোলন করে একটি পক্ষ। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তোজনা চলছে। বিষয়টি ইউএনওকে জানালে তিনি দোকান ঘর সরিয়ে নেবার কথা জানান। কিন্তু প্রভাবশালী মহলটি দোকান না সরিয়ে উল্টো নানাভাবে সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। দোকান ঘর উত্তোলন নিয়ে দুটি পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে থাকায় এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন মুহুর্তে তা সংঘর্ষে রুপ নিতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তারা সরকারী খাল থেকে অবৈধ দোকান গুলো ভেঙ্গে দিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে রুপাপাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজার রহমান জানান, যারা পূর্বে দোকান তুলেছিল তারা নতুন করে দোকান উত্তোলন করতে পারেনি। অন্যপক্ষ সেখানে বেশকিছু দোকান ঘর তুললে উত্তেজনা চলে আসছে। সরকারী জমিতে অবৈধভাবে দোকান ঘর উত্তোলন করায় সে গুলো ভেঙ্গে দিতে ইউএনও মহোদয়কে অনুরোধ করেছি। বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঝোটন চন্দ বলেন, সরকারী স্বার্থ ও অবৈধ দখলকৃত সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করা আমাদের দায়িত্ব। এ বিষয়ে আপস করার কোন সুযোগ নেই। যারা অবৈধভাবে দোকান ঘর উত্তোলন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সরকারী কাজে বাঁধা দান এবং কর্মকর্তাদের সাথে খারাপ আচরণ করার পর তারা উল্টো মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।