মো. কাজল। একজন আমেরিকা প্রবাসী। তিনি দীর্ঘদিন ব্যবসা করছেন। একইসঙ্গে সমাজসেবাও করছেন। দেশ কিংবা বিদেশে তাঁকে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। তবুও মানুষের বিপদে সমবেদনা জানাতে মোটেও ভুল করেন না। এবারেও ঠিক তাই হয়েছে। করোনার সময় আমেরিকায় এবং নিজ এলাকায় অনেক মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করছেন। আবার একাধিক ব্যক্তিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। এখনো সেই ধারা অব্যাহত আছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। স্বার্থবিহীন নিয়মিত মানুষের কল্যাণে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য তাঁর অবদানের কথাও এলাকার অনেকের মুখে মুখে আলোচিত হচ্ছে বলে জানাগেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই কাজলের গ্রামের বাড়ী নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে। তিনি বসুরহাটের সাবেক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং সমাজসেবক মৃত আলহাজ¦ সুলতান আহমদের বড় পুত্র। আমেরিকা থাকলেও মানুষের দুঃখ, হাসি-কান্নার সাথে তিনি নিজকে জড়িয়ে ফেলেছেন বহু আগেই। ফলে একাধিক সম্মাননাও পেয়েছেন তিনি। পরিশ্রমী ও সৎ এই কাজল। তাঁর সুনাম আমেরিকা ছাড়াও নিজ উপজেলায় রয়েছে। বিগত ১৯৯৫ সালের জানুয়ারী মাসে পরিবারের কথা চিন্তা করে পাড়ি দেন আমেরিকায়। সেখানে এখন তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। প্রতি বছর তিনি আমেরিকায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেই অনুষ্ঠানে স্বনামধন্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন। কারও বিপদ হলেও ছুটে যাচ্ছেন। ইতঃপূর্বে শিক্ষা এবং সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় তিনি ভারতের কলকাতায় ‘মৈত্রী সম্মাননা ও দৈনিক নোয়াখালী প্রতিদিন পদকসহ বেশকিছু সম্মাননা পদক পেয়েছেন। এই করোনার সময়ে কয়েক দফায় মো. কাজল দরিদ্র মানুষজনকে আর্থিক সহযোগিতা করছেন। ঝুঁকি নিয়ে আমেরিকায় অনেককে চিকিৎসা এবং নিজ খরচে ওষুধপত্র সরবরাহ করেছেন। আবার খাবারও পৌঁছে দিয়েছেন। অন্তত দশ লক্ষ টাকা এবারে করোনাকালীন সময়ে মানুষের পেছনে ব্যয় করেন তিনি। এতে মোটেও বিরক্ত হননি তিনি। আমেরিকায় নিজ ব্যবসার মন্দা ভাব চললেও অভাবী মানুষদের তিনি কখনো নিরাশ করেননি। কর্মের কারণে কোম্পানীগঞ্জের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ মো. কাজলের কথা সব সময় স্মরণ করছেন।
সূত্র জানায়, বিগত ১৯৯২ সালে কৃতিত্বের সাথে বসুরহাট সরকারী মুজিব কলেজ থেকে বিএ পাস করেন তিনি। পৌর মার্কেট সংলগ্ন খাজা মার্কেটে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘খাজা বেকারী, তাঁরই ছোট ভাই খাজা নজরুল ইসলাম এবং স্বপন সুন্দরভাবে পরিচালনা করছেন। তারাও মানুষের কল্যাণে বড় ভাই কাজলের মতো কাজ করছেন। এর আগে ১৯৯৮ সালে মো. কাজল আমেরিকার মেরিল্যান্ড স্টেটের বাল্টিমোর শহরে সারাটোগা রোডে ‘বিসমিল্লাহ বডি ওয়েল এ- ভ্যারাইটি ষ্টোর’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এরপর আরো বড় আকারের দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। বাবা মায়ের আদরের সন্তান এবং এলাকার মানুষের আপনজন কাজল। তিনি এক পুত্র সন্তানের জনক। ওই সন্তান আমেরিকায় লেখাপড়া করেন। পরিবারের ৭ ভাই-বোনের মধ্যে কাজল ২য়। কোম্পানীগঞ্জে কাজলের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘আলহাজ¦ সুলতান-আনোয়ারা ফাউন্ডেশন’। ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি বহু সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। বসুরহাট একাডেমীর মাধ্যমে বিগত ২০০৬ সালে তিনি চালু করেন আলহাজ¦ সুলতান -আনোয়ারা স্কলারশীপ বৃত্তি। এই প্রকল্পের আওতায় তিনি বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান করেছেন।
অভিভাবকরা জানায়, তাঁর অবদানে বহু ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া চলে। জটিল অনেক রোগীকে তিনি চিকৎসার খরচও দিয়েছেন। বছরের দুই ঈদেও এলাকার দুস্থ্যদের জন্য তাঁর উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা থাকে। বিএনপির রাজনীতির সাথে তিনি সম্পৃক্ত। তবুও এলাকায় দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত আলোকিত সৌরভ পত্রিকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান মোহছেন আউলিয়া কাদের ওবিধা ফাউন্ডেশনের মহাসচিব পদে আছেন। অপরদিকে বসুরহাট একাডেমীর পরিচালক ও বসুরহাট নার্সিং হোমের সফল প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। অনেক পূর্বে তিনি কবিরহাট রোডের গোয়ালের পোল এলাকায় অন্তত ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন বায়তুন নাজাত জামে মসজিদ। এই মসজিদে এখনো অনুদান দিয়ে আসছেন তিনি। সেখানে মসজিদ চালু হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ আনন্দিত। নামাজ পড়ে তাঁর জন্য অনেকেই মহান রবের কাছে দোয়াও করছেন। এভাবে এলাকায় কাজলের অসংখ্য সেবামুলক কর্মকা- চলমান রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।