কসবা উপজেলার কায়েমপুরে ১৪ বছরের সহজ ও সরল প্রকৃতির এক প্রতিবন্ধি শিশুকে জোরপূর্বক ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবন্ধি শিশুটির মা বাদী হয়ে একই এলাকার সুমন মিয়ার (২৪) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগটির প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় শনিবার (৪ জুন) থানায় ধর্ষনের মামলা হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাসান মিয়া বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি কিছু লোকজন স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী ভূইয়াকে জানানোর পর তিনি ধর্ষণের বিষয় মিমাংসার যোগ্য নয় বলে থানায় প্রেরণ করেন।
অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কসবা উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের ওই প্রতিবন্ধি শিশুটি তার মায়ের সাথে গত বুধবার (১ জুলাই) দুপুরে বাড়ির উত্তর পাশে একটি মৎস্য খামারের পাড়ে লাকড়ী কুড়াতে যায়। মেয়েটির মা তাকে ওই খানে রেখে দুপুরের খাবার খেতে বাড়িতে যায়। ওই সময় তাদের পাশ্ববর্তী বাড়ির সুমন মিয়া (২৪) শিশুটিকে একা পেয়ে জোরপর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে সুমন পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটির মা খাবার শেষে ফিসারির পাড়ে গিয়ে দেখতে পায় তার শিশু কন্যা বস্ত্রহীন রক্তাক্ত ও অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। পরে তার পরিবারের অন্যান্য লোকজন মাথায় পানি দিলে ঘন্টাখানেক পরে ধর্ষিতা শিশুর জ্ঞান ফিরে আসে। ঘটনার পর থেকেই সুমন মিয়া এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে গত শুক্রবার সুমন মিয়াকে আসামি করে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেছে। পুলিশ শনিবার মামলাটি ধর্ষণের মামলা হিসাবে থানায় রেকর্ড করে।
শনিবার দুপুরে ধর্ষিতা শিশুর বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, শিশুটি অসুস্থ অবস্থায় শুয়ে আছে। শিশুটির মা বলেন, মেয়েকে রেখে বাড়িতে আসার পর সুমন মিয়া তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। উলঙ্গ রক্তাক্ত এবং অজ্ঞান অবস্থায় তার মেয়েকে পেয়েছেন। পরে কাপড় পড়িয়ে ঘন্টাখানেক মাথায় পানি ঢালার পর সুস্থ হয়। সহজ ও সরল ভাষায় শিশুটি বলেন, সুমন মিয়া তাকে গলায় চিপা দিয়ে ধরে কাপড় খুলে খারাপ কাজ করেছে।
সুমন মিয়া (২৪) কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। শনিবার দুপুরে ওই সুমন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে বাড়ির একটি ঘরের দরজা তালা রয়েছে। অন্য একটি ঘর থেকে বেড়িয়ে আসেন সুমনের বৃদ্ধ বাবা। তিনি বলেন, পুলিশ আসার পর থেকেই তার ছেলে বাড়ি থেকে চলে গেছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলছেন, মেয়েটি সহজ ও সরল প্রকৃতির। ঘটনার দুইদিন পর শিশুটির মা থানায় এসে সুমনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় শনিবার থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। আজ রোববার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হবে।