‘যন্ত্র ছাড়াই রোগের টেস্ট,ওষুধ ছাড়াই রেজাল্ট বেস্ট,আঙুল চাপেই রোগ সারে- প্রাকৃতিক চিকিৎসা বলে যারে’ এমন সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবার নামই আকুপ্রেসার চিকিৎসা পদ্ধতি। প্রত্যেক মানুষ নিজেই অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের রোগ নির্ণয়, নিরাময় এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এ পদ্ধতি অনুশীলন ও প্রয়োগের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে নিজ বা নিজেদের রোগ নির্ণয় করে তা নিরাময় করতে পারেন খুব সহজেই। মার্কিন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডাঃ উইলিয়াম ফ্রিটজ জেরাল্ড একদল উদীয়মান চিকিৎসক নিয়ে আধুনিক গবেষণায় আজকের আকুপ্রেসারকে বিকাশিত করেছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন অনেক জটিল ও কঠিন রোগও শুধু আকুপ্রেসার দিয়ে নিরাময় সম্ভব যা ঔষধে অনেক সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। আকুপ্রেসার চিকিৎসা পদ্ধতি এমন একটি পদ্ধতি যা অনেক কঠিন রোগও খুব সহজেই নিরাময় হয়ে যায়। আমাদের দেশে এখন অনেক মানুষ আকুপ্রেসার করছেন, রয়েছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। দিনে দিনে আকুপ্রেসার লোকপ্রিয়তা পাচ্ছে।
ভারতবর্ষে ছয় হাজার বছর আগে আজকের আধুনিক আকুপ্রেসার প্রচলন ছিল, মুণি ঋষিগণ তাদের রোগ নিরাময়ের জন্য এক গোপন বিদ্যা হিসেবে নিজের কাছে রাখতো, মুণিঋষির ভক্তকুল অসুস্থ হলে আকুপ্রেসারের মাধ্যেমে রোগ নিরাময় করতেন। সেই সাথে খাদ্যের প্রতুলতা এবং পথ্যের প্রাপ্তির জন্য ভক্তের থাকার স্থান বদলের নির্দেশ দিতেন, সেই আলোকে ভক্ত তার জন্য উপযোগী স্থান এবং উপযোগী পথ্য যেখানে আছে সেখানেই থাকতেন। পরবর্তীকালে এই আকুপ্রেসার শ্রীলংকায় যেয়ে আকুপাংচার নামধারণ করে চীনের ব্যাপক পরিচিতি পায়। একবিংশ শতাব্দীতে এসে তা বিকাশ ঘটিয়েছেন ভারতের আকুপ্রেসার বিশারদ দেবেন্দ্র ভোরা। আকুপ্রেসার বিভিন্ন জাতির কাছে বিভিন্ন নামে যা আকুপ্রেসার, রিফ্লেক্সোলজি, সুজোক, জোন থেরাপী ইত্যাদি নামে প্রসার পায়।
বাংলাদেশে আকুপ্রেসারের প্রচলন ও বহুল প্রচার করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সাগর সগির ও তাঁর চৌকষদল। আর কিশোরগঞ্জে এর প্রসার ঘটান কিশোরগঞ্জ আকুপ্রেসার থেরাপি সোসাইটির সভাপতি থেরাপিস্ট ও সাংবাদিক রেজাউল হাবীব রেজা। তিনি জানান, আকুথেরাপী চিকিৎসা নিয়ে কিশোরগঞ্জে অনেক পরিবার সুস্থ হয়েছে। ত্রিশটি পরিবার আকুপ্রেসারের প্রয়োগ করে এবং যন্ত্রপাতি বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছে। জেলা সদরের গাছ বাজারে আকুথেরাপিস্ট মোঃ মাহমুদুর রহমানের পরিশ্রমে দীর্ঘ বছর যাবত আকুপ্রেসারের বিভিন্ন যন্ত্রাদি তৈরী করে কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তা সরবরাহ করা হচ্ছে।
আকুথেরাপিস্ট হাজী মোঃ আবু সাঈদ বলেন, আমি নিজেও আকুথেরাপির উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে বাস্তবে তা প্রয়োগ করে উপকার পেয়েছি।