কিশোরগেঞ্জর বাজিতপুরের রস্তমপুর গ্রামের নিলু মিয়ার ছোট ছেলে মো. রাব্বী (১৮) গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৭ টার পর থেকে তাকে ব্যাটারিচালিত অটোসহ তাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারসহ আত্মীয়-সজন ও বন্ধু-বান্ধব গত ২দিন ধরে বাজিতপুর উপজেলাসহ পাশ^বর্তী বিভিন্ন থানা, হাসপাতাল, বাজার-ঘাট সন্ধান করেও এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বাজিতপুর থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করা হয়েছে। এর জিডি নং-২৫২ এবং জিডির অর্ন্তভুক্ত তারিখ ৮/০৭/২০২০। জিডির বর্ণনা মতে, মঙ্গলবার আনুমানিক ৪টার সময় মো. রাব্বী অটোগাড়ী নিয়ে বাড়ি থেকে বাহির হয়। অুনমান সন্ধ্যা ৭ টায় রাব্বীর চাচাতো ভাতিজা কাইয়ুম (২২)-এর সাথে মোবাইলে শেষ কথা বলেন। কাইয়ুম-এ বিষয়ে প্রতিবেদককে জানায়, আমি রাব্বীরে জিগাইছি তুই এহন কই। হে বলছে, আমি সুলমানের নাতিরে লইয়া (সাচ্চুর নানার নাম সুলমান) বাজিতপুর আইছি। এর থেকে অদ্যাবধী তার মোবাইল বন্ধ। অটো গাড়ীরও কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
তিন দিন ধরে ছেলের সন্ধান না পাওয়ায় মা ও বাবা বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে। প্রতিবশিরা শত চেষ্টা করেও মা-বাবার কান্না থামাতে পারছে না। এলাকাবাসীর অভিযোগ একটি প্রভাবশালীর বখাটে ছেলের প্রতি অভিযোগ থাকলেও রাব্বীর পরিবার দারিদ্র হওয়ায় এ বিষয়ে থানা প্রশাসন এখনও কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এ বিষয়ে ভাগলপুর তদন্তা কেন্দ্র কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগ উত্থাপনকারীর (সাচ্চু) বাড়িতে গতকাল রাত্রে গিয়েছিলাম তবে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। আমরা এ বিষয়ে নিখোঁজ রাব্বীর মোবাইল নাম্বার ট্রেকিং করে ঘটনার দিন কোথায় ছিল, কার সাথে কথা বলেছে তা বের করার চেষ্ঠা করছি। এ রিপোর্ট হাতে পেলেই আমরা মূল রহস্য বের করতে পারব।”
রাব্বীর বড় ভাই মো. সাদেক কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রতিবেদককে বলেন, আমার ভাইরে হে হয়তো গাড়ীর লাই¹া মাইরা ফালাইছে। হে আমার ভাইরে (নিখোঁজ রাব্বী) কয়েক দিন আগেও প্রস্তাব দিছে সন্ধ্যার পরে বাংলা বাজার থেইক্কা ৩ জন মানসেরে (মানুষকে) বাজিতপুর হের অটো নিয়া দিয়া আইতো। বেশি ভাড়া দিবো এই লোভও দেহাইছে। আমার ভাইরে পিরিজপুর বাজারে একদিন অটো গাড়ী চালাইতে দেইকা (দেখে) হে বলে তোর গাড়ীটা কুব (খুব) সুন্দর। কয়টা ট্যাহা দে কিনচছ। হেই কত রাব্বী মার কাছে কইছে। কয়েক দিন আগে রাব্বী মার কাছে কইছে, মা হাপাইন্নার (হাপানিয়া) বাদলের পুত (ছেলে) কালি আমারে লোভ দেহাই রাইতে (রাত্রে) বাজিতপুর যাইতে আর আমার গাড়ী কত ট্যাহা দিয়া কিনছি এ কতা কয়।” এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, ঘটনার দিন রাত্রে আনুমানিক ৮:৩০ টারে দিকে সন্দেভাজন সাচ্চুর (১৮) বাড়ির কাছে ঈদগাহ মাঠে একটি পরিত্যক্ত অটোগাড়ী রাব্বীর বন্ধু অটোচালক মমিন (১৮) দেখতে পায়। পরবর্তী দিন সকালে রাব্বীর ভাই সেখানে গিয়ে কোন অটোগাড়ী দেখতে পায়নি। তবে রাস্তার পাশে পাট খেতের অনেকটুকু অংশ ভাঙ্গা দেখতে পায়। সাচ্চু এলাকায় নেশাখোর, মোবাইল চোর ও খারাপ নারীদের নিয়ে নিয়মিতভাবে ঘনিষ্টবন্ধু নিয়ে বাজে কাজ করে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে। ঘটনার এক দিন পর থেকে সাচ্চুকে কেউ এলাকায় দেখতে পাচ্ছে না। এ বিষয়ে সাচ্চুর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা বর্তমানে স্বপরিবারে বাড়ি থেকে পলাতক রয়েছে। বাজিতপুর থানার ওসি ঘটনা সত্যতা স্বীকার করেন।